কড্ডায় ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সামিটের চুক্তি

বিদ্যুত্ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিদ্যুত্ উত্পাদনে অনেক বেসরকারি কোম্পানি কাজ করছে। কিন্তু সঞ্চালন ও বিতরণে তাদের অংশগ্রহণ কম। এখাতেও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।
বুধবার বিদ্যুত্ ভবনে গাজীপুরের কড্ডায় ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপনে অনুষ্ঠিত এক চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। দ্বৈত জ্বালানি ভিত্তিক এ বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপনের চুক্তি সইয়ের সময় বিদ্যুত্ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ, সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। সামিট পাওয়ার ও এলায়েন্স হোল্ডিং লিমিটেড যৌথভাবে এই বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপন করবে। এজন্য পিডিবির সঙ্গে বিদ্যুত্ কেনার চুক্তি (পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট) এবং বিদ্যুত্ বিভাগের সঙ্গে বাস্তবায়ন চুক্তি (ইমপ্লিমেন্টেশন এগ্রিমেন্ট) সই করেছে তারা। সামিট এইস এলায়েন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল হোসেন, পিডিবির কোম্পানি সচিব মিনা মাসুদ উজ্জামান এবং বিদ্যুত্ বিভাগের পক্ষে যুগ্ম সচিব শেখ ফয়জুল আমিন চুক্তি সই করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থাপনায় বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ সূষম উন্নয়নে সহায়তা করবে। ৪৯ ভাগ বিদ্যুত্ বর্তমানে বেসরকারি
খাত হতে উত্পাদন করা হয়। বেসলোড পাওয়ার সরকারি খাতে রেখে বাকী বিদ্যুত্ বেসরকারি খাত হতেই নেয়া হবে। তিনি বলেন, বিদ্যুতের চহিদা উত্তরোত্তর বাড়ছে। বেসরকারি খাত, উপ আঞ্চলিক সহযোগিতা ইত্যাদি উত্স হতে এ চাহিদা পূরণে সরকার তত্পর রয়েছে। সঞ্চালন ব্যবস্থায় বেসরকারি খাত আসলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্ আরো দ্রুততার সঙ্গে দেয়া সম্ভব হবে।
বিদ্যুত্ সচিব বলেন, বিদ্যুত্খাতের আজকের এই উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি দুই সংস্থাই সমন্বিত হয়ে কাজ করছে। তিনি বলেন, কড্ডার বিদ্যুেকন্দ্রটি সর্ম্পণ দেশীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করা হচ্ছে। এটি খুবই আশাব্যঞ্জক। বড় বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানই এগিয়ে গেছে।

summit kodda  energy bangla

পিডিবির চেয়ারম্যান বলেন, গত আট বছরে ৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত্ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। বিদ্যুত্ বিভাগের সমন্বিত কাজের ফলেই উত্পাদন ক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, হঠাত্ করেই বড় বিদ্যুেকন্দ্র উত্পাদনে আসতে পারে না। এজন্য সময়ের প্রয়োজন। একটি বড় বিদ্যুেকন্দ্র স্তাপন করতে কমপক্ষে তিন বছর সময় প্রয়োজন। ভবিষ্যতে বেশ কয়েকটি বড় বিদ্যুেকন্দ্র উত্পাদনে আসবে বলে তিনি জানান। আজিজ খান বলেন, বর্তমানে সামিট প্রায় এক হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদন করছে। এখন আরো ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুেকন্দ্র
স্থাপন করতে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে সামিট আরো এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদন করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তিনি জানান, বিদ্যুতের পাশাপাশি
জ্বালানিখাতেও সামিট কাজ করতে যাচ্ছে। কক্সবাজারের মহেশখালীতে একটি এলএনজি স্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা যাবে। তিনি জানান, আগামী বছরের মার্চের মধ্যে বিদ্যুেকন্দ্রটি স্থাপনের কাজ শেষ করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ১৫ বছর মেয়াদি এই বিদ্যুেকন্দ্র দশ একর জমির ওপর স্থাপন করা হবে। ফার্নেস অয়েলে বিদ্যুত্ উত্পাদন করা হলে বিপিসির তেলের দাম লিটার প্রতি ৪২ টাকা হিসেবে বিদ্যুতের দাম পড়তে ইউনিট প্রতি ১০ টাকা ১৫ পয়সা। তবে আমদানি করা ফার্নেস অয়েলের দাম লিটার প্রতি ২৭ টাকা ৩১ পয়সাধরে এই বিদ্যুেকন্দ্রের বিদ্যুতের দাম পড়বে ইউনিট প্রতি ৭ টাকা ১৫ পয়সা। তবে গ্যাস পাওয়া গেলে এই কেন্দ্রটির বিদ্যুতের দাম পড়বে দুই টাকা ৮০ পয়সা।  চুক্তি সাক্ষরের ১৫ মাসের মধ্যে কেন্দ্রটি উত্পাদনে আসার কথা রয়েছে।