তেলের দাম পর্যালোচনার সুপারিশ সংসদীয় কমিটির

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম কমানো যায় কি-না তা পর্যালোচনা করার সুপারিশ করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। মঙ্গলবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এই তাগিদ দেয়া হয়।
কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, আতিউর রহমান আতিক, মো. আবু জাহির, এম আবদুল লতিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার এবং বেগম নাসিমা ফেরদৌসী।
তেলের দাম কমানো হলেও সাধারণত যানবাহনের ভাড়া কমানো হয় না। এ ছাড়া কৃষিকাজসহ অন্যান্য কাজে তেলের মূল্যের ওপর নির্ভরশীলদের কোনো উপকার হয় না। এর সুবিধা মধ্যস্বত্বভোগীরাই পেয়ে থাকেন। তাই এর বিকল্প চিন্তার কথা জানান তারা। তেলের দাম কমানো হলে সাধারণ মানুষ যাতে সুফল পায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করার তাগিদ দেয়া হয়।
বৈঠকে কমিটির সদস্য মো. আতিউর রহমান আতিক বলেন, জ্বালানি তেলের দাম না কমিয়ে সার ও আবাসিক এলাকায় বিদ্যুতের দাম কমালে সাধারণ মানুষ তেলের মূল্য কমানোর সরাসরি সুবিধা পাবে।
বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর ফলে ২০১৪ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৫ মাসে ১১ হাজার ৭৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বিপিসির আয় হয়েছে। আয়ের এই অর্থ থেকে সাত হাজার ১০৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বিভিন্ন ধরনের দেনা পরিশোধ করা হয়েছে। এ ছাড়াও ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল)-২-এর জন্য জমি ক্রয় করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ব্যাংকের দায় শোধ করা হয়েছে তিন হাজার ৮৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। পেট্রোবাংলার দায় শোধ করা হয়েছে এক হাজার ২৬৪ কোটি টাকা। ভ্যাটের বকেয়া শোধ করা হয়েছে ৬০৩ কোটি ২৫ লাখ এবং ইআরএল-২ ইউনিটের জমি ক্রয় বাবদ ২৩৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া পেট্রোবাংলাকে ৪৯৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা পরিশোধের প্রক্রিয়া চলছে। বাকি অর্থ বিপিসির ব্যাংক হিসাবে স্থিতি হিসেবে রয়েছে। এসব ঘাটতি সমন্বয়ের পরেও সরকারের দেয়া ঋণ ২৬ হাজার ৩৪৯ কোটি ৮১ লাখ টাকার দেনা অবশিষ্ট আছে।

বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, বর্তমানে ডিজেলের ক্রয়মূল্য ৪০ টাকা ১৬ পয়সা, বিক্রয় মূল্য ৬৮ টাকা। কেরোসিন ৪০ টাকা ৬১ পয়সা, বিক্রয় মূল্য ৬৮ টাকা। পেট্রোলের ক্রয়মূল্য ৬২ টাকা ৫০ পয়সা, বিক্রয় মূল্য ৯৬ টাকা। অকটেনের ক্রয়মূল্য ৬২ টাকা ১৫ পয়সা, বিক্রয় মূল্য ৯৯ টাকা। ফার্নেস অয়েল ৩২ টাকা ৮১ পয়সা, বিক্রয় মূল্য ৬০ টাকা এবং জেট এ-১ ক্রয়মূল্য ৪০ টাকা ৯৫ পয়সা, বিক্রয় মূল্য ৬১ টাকা।