রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য দক্ষ জনবল তৈরি হচ্ছে: ইয়াফেস ওসমান

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে জাপানের ফুকুশিমার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো হবে। রাশিয়ার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ভিভিইআর (পাঁচস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা) ব্যবহার করা হবে। নিরপত্তার পাশাপাশি দক্ষ জনবলও তৈরি করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পারমাণু শক্তি কমিশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি বিজ্ঞানী সংঘ (বায়েসা) আয়োজিত রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশ এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন শীর্ষক এক সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক শওকত আকবর। বায়েসার সভাপতি ড. মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব খোন্দকার মো. আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশ পরমানু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নঈম চৌধুরী, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।
ইয়াফেস ওসমান বলেন, অনেকের মধ্যে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং এর নিরাপত্তা নিয়ে ভীতি রয়েছে। কিন্তু আমরা এই প্রকল্পে বিশ্বের সর্বাধুনিক ও সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশকে সেই নিশ্চয়তা দিয়েছেন। তাই এ নিয়ে ভীত অমূলক। প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ধরণের কেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তির পাশাপাশি দক্ষ জনবল তৈরির প্রয়োজন। এজন্য সরকার এরইমধ্যে ভারত ও রাশিয়ায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই প্রশিক্ষণ চলবে বলে তিনি জানান।
আসাদুজ্জামান বলেন, পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র একটি বিশেষ ধরনের প্রকল্প। এ ধরনের প্রকল্পে আগে কেন্দ্র স্থাপন করবো পরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো এমন সুযোগ নেই। দু’টো কাজ একই সঙ্গে করতে হবে। আমরা সে অনুযায়ীই কাজ করছি।
মূল প্রবন্ধে শওকত আকবর বলেন, বর্তমানে বিশ্বের মোট ৩১টি দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে। । এসব কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন মোট ৩ লাখ ৭০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে ৭০টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলছে এবং আরো ১৬০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভারত আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে ৬৪ হাজার এবং চীন একইসময়ের মধ্যে ২ লাখ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তাই আমাদের দেশে এই প্রকল্পের গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নতুন পাওয়ার সিস্টেম মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে পারমাণবিক প্রকল্প থেকে ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু সম্পদের সীমাবদ্ধতার কথা বিবেচনায় নিয়ে আমরা মনে করছি এটা যথেষ্ট নয়। এ সময়ের মধ্যে এর থেকে অন্তত ৭ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা উচিত। শওকত আকবর বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএইএসহ বিভিন্ন সংস্থা বাংলাদেশে এ প্রকল্পের বিষয়ে মনিটরিং করছে। তারা এর অগ্রগতি নিয়ে সন্তুষ্ট। এতে প্রমাণিত হয় যে আমরা এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সমর্থ। এ নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। জনবল তৈরির কাজও সমানভাবে এগিয়ে চলছে বলে জানান তিনি।