রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সরকারের অনমনীয় অবস্থান উদ্বেগজনক

সুন্দরবন ধ্বংস করে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মান প্রশ্নে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের অযৌক্তিক অনমনীয় অবস্থান দুই দেশ ও সারা বিশ্বের সব সচেতন ও যুক্তিবান মানুষের জন্যই একটি গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার এক বিবৃতিতে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক এডভোকেট সুলতানা কামাল এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত রোববার এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, “প্রতিবাদী নাগরিকরা রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে কোন সঠিক তথ্য, প্রমাণ ও যুক্তি ছাড়াই তাদের বিরোধিতা ও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।” সুলতানা কামাল বলেন, মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের এই বক্তব্যটি একেবারেই সত্য নয় এবং তা আন্দোলনকারী নাগরিক সমাজের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত অপপ্রচারের শামিল। তার ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত এই অসত্য বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান তিনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, সুন্দরবনের পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ‘বাফার জোন’ থেকে মাত্র ০৪ কিলোমিটারের মধ্যে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে তা থেকে বিষাক্ত গ্যাস ও রাসায়নিক বর্জ্য নিশ্চিতভাবেই সুন্দরবনের সব গাছপালা, তৃণলতা-গুল্ম, পশু-পাখী, জলজ প্রাণীসহ সার্বিক ও অন্য জীব-বৈচিত্র ধ্বংস হবে। বনের উপর নির্ভরশীল মানুষের জীবিকা বিনষ্ট হবে এবং সারা দেশ জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সংকট বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান সাইক্লোন জনিত ধ্বংসলীলার চারণভুমিতে পরিণত হবে। সরকার এখন বিজ্ঞানকে অস্বীকার করে নানাবিধ অপ্রাসঙ্গিক, অপ্রয়োজনীয়, অসত্য তথ্য ব্যবহার করে উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ ও দেশবাসীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছেন. মন্ত্রীর এই বক্তব্যই তার প্রকৃষ্ট প্রমান।
হাজার হাজার বছরের পরিপূর্ণতায় যে অনন্য সুন্দরবন তৈরি হয়েছে তাকে সম্পদ ও পরিবেশ বিনাশী কোন কর্মকান্ড দ্বারা যাতে বিনষ্ট না হয় সে বিষয়টি দুই দেশের সরকার বিবেচনা করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ  করেন। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকে বাঁচানোর স্বার্থে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পটি অবিলম্বে বাতিল করা অথবা সুন্দরবন থেকে নিরাপদ দুরত্বে সরিয়ে নেয়ার জন্য ৫৩টি সামাজিক আন্দোলনের সমন্বয়ে গঠিত সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে সুলতানা কামাল এ দাবি জানান।