রামপাল নিয়ে ইউনেস্কোর প্রতিবেদন দুইমাস পর

রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প সুন্দরবনের ক্ষতি করবে কিনা তা নিয়ে দুইমাস পর প্রতিবেদন দেবে ইউনেস্কো। তবে এই প্রতিবেদন বাংলাদেশকে দেবে না। প্রতিবেদনের আলোকে কিছু পরামর্শ দেবে। সেই অনুযায়ি বাংলাদেশকে কাজ করতে হবে।

ইউনেস্কো বিশেষজ্ঞ দলের প্রতিবেদনের ওপরই নির্ভর করছে জাতিসংঘের ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় সুন্দরবনের নাম থাকবে কিনা।
তিনদিনের সফরে প্রথমদিন তারা রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের সঙ্গেও কথা বলেন।
এরপরের দুইদিন সুন্দরবন ও এর আশেপাশের এলাকা, মংলাসহ সুন্দরবনের যেসব নদীতে কার্গো ডুবির ঘটনা ঘটেছে তা পরিদর্শন করেন। গত সোমবার সংশি­ষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে তারা ঢাকা ত্যাগ করেন।
ইউনেস্কোর সফর সম্পর্কে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল হান্নান বলেন, সুন্দরবন ঘুরে তারা একটি প্রতিবেদন তৈরি করবে। সেই প্রতিবেদন বাংলাদেশকে দেবে না। সেই প্রতিবেদনের আলোকে বাংলাদেশকে সুন্দরবন রক্ষায় কিছু পরামর্শ দেবে। যাতে সেসব বিষয়ে বাংলাদেশ উদ্যোগ নিতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি সূত্র জানায়, ইউনেস্কো প্রতিনিধিদলটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহার করা কয়লা পরিবহন, পরিবহনের সময় দুর্ঘটনা হলে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে, বিদ্যুৎকেন্দ্রের চিমনি কেমন হবে, কয়লা বোঝাই জাহাজ আসার পথে নদীতে ডুবে গেলে করণীয় কি হবে, সুন্দরবন থেকে এই কেন্দ্রের দুরত্বসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চেয়েছে।
এদিকে শেষ দুইদিন প্রতিনিধিদলটি পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়সহ আটটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সূত্র জানায়, প্রতিনিধিদল রামপাল প্রকল্প চালু হওয়ার পর এর পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নের মতো সাংগঠনিক ও কারিগরি কাঠামো রয়েছে কি না, খুলনা ও সুন্দরবনকে ঘিরে মন্ত্রণালয়ের অনেক বড় পরিকল্পনা আছে। যেমন মংলা বন্দর সম্প্রসারণ, পায়রা বন্দর নির্মাণ, নদী খনন এসব প্রকল্প সুন্দরবনের ওপর কী প্রভাব ফেলবে, তার মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে কি না ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চেয়েছে।
সফরসূচিতে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি, তেল-গ্যাস ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির খুলনা শাখা, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এবং রামপাল এলাকার পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা করেনি। সংগঠনের নেতারা বলেন, এক তরফা আলোচনা করে ইউনেস্কো কোনো প্রতিবেদন দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
গত ২৩ মার্চ বাংলাদেশে আসে ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদল। ২৮ মার্চ রাতে ফিরে যায়। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র থেকে পাঠানো রি-অ্যাকটিভ মনিটরিং মিশন নামের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন ফানি এডলফাইন ডাউভিরি, নাওমি ক্লেয়ার ও মিজুকি মুরাই।