রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে তিন কোম্পানি দরপত্র কিনেছে

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানে ভিন্ন ভিন্ন সুবিধা চাইছে ঠিকাদার কোম্পানিগুলো। বিশেষ করে ভারতীয় কোম্পানি অভিজ্ঞতা শিথিল করার আবেদন করেছে। কেন্দ্র নির্মান করার জন্য যে সময় বেধে দেয়া হয়েছে তাও অনেক কম বলে দাবি করেছে কেউ কেউ।
জাপানের মারুবিনি, ভারতের ভেল আর চীনা কোম্পানি হারবিন এই প্রাক আলোচনা শেষে এই দরপত্র কিনেছে। বাকী ১৭টি কোম্পানি পরপ্রস্তাব কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ঠ কোম্পানিগুলোকে সুবিধা দেয়া হবে কিনা তা সকল বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ঠরা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ ইণ্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিলি) এর কর্মকর্তা বলেন, কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে তাদের অবস্থান জানা হলো। এগুলো পর্যালোচনা করে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। যদি বোর্ড সম্মত দেয় তবে দরপ্রস্তাবের শর্ত শিথিল করা হবে।
সোমবার ও মঙ্গলবার দুদিন ধরে অনুষ্ঠিত হল রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রাক দরপত্র পর্যালোচনা। বিদ্যুৎভবনে এই আলোচনা অনুষ্টিত হয়। এতে বিভিন্ন দেশের বড় বড় ২০টি কোম্পানির ৮০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।
দরপ্রস্তাব অনুযায়ি ২০১৮ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। কিন্তু সংশ্লিষ্ঠ কোম্পানিগুলো বলছে, রামপাল অনেক বড় প্রকল্প। এজন্য এখন শুরু করলে ২০১৮ সালের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হবে না। এই সময় বাড়িয়ে দিতে হবে। এছাড়া দেশের বাইরে কাজ করার অভিজ্ঞতা শিথিল করার প্রস্তাবও দিয়েছে দুএকটি কোম্পানি। সংশিèষ্ঠ কোম্পানি যে দেশের হবে তার বাইরের অন্য কোন দেশে ৫০০ মেগাওয়াট বা এরও বেশি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। টার্নকি প™ব্দতিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ এবং তা সফলভাবে এক বছর পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে বাংলাদেশ ভারত যৌথ কো¯ক্সানি গঠন করা হয়। এরআগে যৌথভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে ২০১০ সালে চুক্তি হয়। এরপর কো¤ক্সানি গঠন করে দরপত্র আহবান করে ঠিকাদার কো¤ক্সানি নির্ধারণ করা হচ্ছে।
রামপালে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন মতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে নির্মান করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের মধ্যে এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্কপ্পনা করা হয়েছে।
টার্নকি প™ব্দতিতে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এ কেন্দ্রটি করবে। বিদ্যুকেন্দ্র নির্মাণের অর্থ ইপিসির (ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট কনট্রাক্ট) মাধ্যমে সংগ্রহ করা যাবে অথবা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েও করতে পারবে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটের নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে চুক্তি করার ৪১ মাসের মধ্যে। আর ™ি^তীয় ইউনিট শেষ করতে হবে ৪৬ মাসের মধ্যে। এই কেন্দ্রের ৭০ শতাংশ অর্থ ঋণ নেয়া হবে। বাকি ৩০ শতাংশ পিডিবি ও এনটিপিসি যৌথভাবে বিনিয়োগ করবে। সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই কেন্দ্র স্ট’াপনে আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ২০১ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এর ১৫ শতাংশ হিসাবে ৩০ কোটি ২১ লাখ ৮৪ হাজার ডলার দিতে হবে পিডিবিকে।
কর্তৃপ জানিয়েছে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রর কারণে সুন্দরবনের পরিবেশের কোনো তি হবে না। অত্যাধুনিত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
বৈঠকে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ভারতের ভেল, জাপানের মারুবিনি কর্পোরেশন, সিমেন্স ইন্ডিয়া, ভারতের লারসোন এন্ড টার্বো, চীনের হারবিন ইলেক্ট্রিক ইন্টারন্যাশনাল, কোরিয়ার হুন্দাই ইলেক্ট্রিক কো¤ক্সানি, চীনের ড্যাং ফ্যাং ইলেক্ট্রিক কো¤ক্সানি, জাপানের মিটসুহারু মিজোটা সুমিটো, মিতসুবিশি, চীনের সাংহাই ইলেক্ট্রিক কো¤ক্সানি, জার্মানির জিই পাওয়ার এন্ড ওয়াটার কর্পোরেমন এবং ম্যাপল লিপ ইন্টারন্যাশনাল।
আগামী ১৭ মে এর মধ্যে দরপ্রন্তাব কেনা এবং ১৮ মে এর মধ্যে জমা দেয়ার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রত্যেক কোম্পানিকে দরপত্র কিনতে এক লাখ টাকা ও দরপত্রের জামানত হিসেবে ১০ লাখ টাকা জমা দিতে হয়েছে।

সীতু
শব্দ: ৪৮১