রমজানে কমল এলপিজির দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক/বিডিনিউজ:

এপ্রিল মাসের জন্য আমদানি করা তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলপিজি) দাম কেজিতে ২০ টাকা ৩৭ পয়সা বা ১৭ শতাংশ কমানো হয়েছে। এতে পর পর দুই মাস দাম কমল।

এতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হওয়া ১২ কেজি সিলিন্ডারে আগের মাসের তুলনায় ২৪৪ টাকা কম লাগবে।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) রোববার এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করে।

বিইআরসি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, এপ্রিলে প্রতিকেজি এলপিজির খুচরা দাম হবে ৯৮ টাকা ১৭ পয়সা, যা মার্চে ছিল ১১৮ টাকা ৫৪ পয়সা।

বিইআরসি বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে সৌদি আরামকো ঘোষিত এলপিজির কাঁচামাল প্রোপেন ও বিউটনের গড় মূল্য প্রতি টন ৭৩৩ ডলার থেকে কমে ৫৪৮ ডলার হয়েছে। সে কারণে দেশের বাজারে এলপিজির দাম কমছে।

যানবাহনের জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা অটোগ্যাসের দাম হবে ৫৪ টাকা ৯০ পয়সা, যা আগের মাসে ছিল ৬২ টাকা ২২ পয়সা।

নতুন ঘোষণায় সাড়ে ৫ কেজি এলপিজির সিলিন্ডার ৫৪০ টাকা, সাড়ে ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ১২২৮ টাকা, ১৫ কেজির দাম ১৪৭২ টাকা, ১৬ কেজি ১৫৭১ টাকা, ১৮ কেজি ১৭৬৭ টাকা, ২০ কেজি ১৯৬৩ টাকা, ২২ কেজি ২১৬০ টাকা, ২৫ কেজি ২৪৫৪ টাকা, ৩০ কেজি ২৯৪৫ টাকা, ৩৩ কেজি ৩২৪০ টাকা, ৩৫ কেজি ৩৪৩৬ টাকা, ৪৫ কেজি ৪৪১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

মার্চেও এলপিজির দাম ৫ শতাংশ কমানো হয়েছিল, তার আগে ফেব্রুয়ারিতে বাড়ানো হয়েছিল ২১ শতাংশ।

 

দাম কার্যকরে ‘উদ্যোগ নেই’

সংবাদ সম্মেলনে এলপিজির খুচরা বিক্রেতা সেলিম খান অভিযোগ করেন, বিইআরসি দাম নির্ধারণ করলেও এই দাম কখনোই কার্যকর হয় না। এলপিজি আমদানিকারক বা অপারেটররা তাদের নিজস্ব বিবেচনা মত দাম ঠিক করে বিক্রি করে।

বিইআরসির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনারা দাম নির্ধারণ করার আগেই গতকাল অপারেটরগুলো দাম কমিয়েছে। তবে তারা ১২ কেজির সিলিন্ডার এখন কারখানা পর্যায়েই ১২০০ টাকা করে বিক্রি করছে। তাহলে এই সিলিন্ডার আমরা খুচরা ক্রেতাদের কাছে কত টাকায় বিক্রি করতে পারব?”

এ সময় কমিশনের একজন সদস্য বলেন, “এখানে শুনানি হচ্ছে না, এটা সংবাদ সম্মেলন। আপনাদের কোনো কথা থাকলে শুনানিতে বলবেন।”

গত ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে আকস্মিকভাবে এলপিজির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। তাদের অনুসন্ধানে কারখানা, আমদানিকারক বা কোম্পানি পর্যায় থেকে দাম বাড়িয়ে দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়।

বিষয়টি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে জানানো হবে বলেও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচ এম সফিকুজ্জামান সে সময় জানান। তবে তিন মাস গড়িয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

নতুন কমিশন দাম কার্যকরে কী পদক্ষেপ নেবে জানতে চাইলে বিইআরসি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, তারা এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের পদক্ষেপ নিতে চিঠি দেবেন। এর বাইরে অপারেটরগুলোর সঙ্গে বসে কথা বলবেন।