বিদ্যুতে পর্যাপ্ত গ্যাস দেয়া যাবে না

সেচে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে গ্যাসের পর্যাপ্ত সরবরাহ দিতে পারবে না পেট্রোবাংলা। অন্যদিকে গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে সিএনজি স্টেশন এবং সারকারখানা বন্ধ রেখে সেই গ্যাস বিদ্যুৎকেন্দ্রে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রোববার বিদ্যুৎ বিভাগে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে পেট্রোবাংলা পিডিবির চাহিদা অনুযায়ি গ্যাস সরবরাহে এই অপরাগতার কথা জানায়। এদিকে অন্য এক বৈঠকে ইন্টারনেট এবং ডিস লাইনের ঝুলন্ত তার কেটে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, এবার সেচ মৌসুমে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে আট হাজার মেগাওয়াট। এজন্য পিডিবির তরফ থেকে দৈনিক এক হাজার ২৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সরবরাহ চাওয়া হয়েছে। তবে পেট্রোবাংলা বলছে তাদের পক্ষে বিদ্যুৎ উৎপাদনে দৈনিক ৯১৪ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস দেয়া সম্ভব নয়। বৈঠকে পিডিবির তরফ থেকে বলা হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সরবরাহ কমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সংকট বাড়বে। এতে সেচে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ সমস্যা হবে।
বৈঠকে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, যে করেই হোক অতীতের মতো সেচে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। এজন্য প্রয়োজনে সারকারখানা বন্ধ এবং সিএনজিতে রেশনিং করা হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিনি পেট্রোবাংলাকে নির্দেশ দেন।
ডিসেম্বর থেকে সেচ মৌসুম শুরু হলেও মার্চ থেকে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত সেচে বিদ্যুৎ চাহিদা বেশি থাকে। একই সময়ে গ্রীষ্ম মৌসুম থাকায় বিদ্যুতের চাহিদাও সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে। এবার সেচসহ গ্রীষ্মের সর্বোচ্চ বিদ্যুতের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে আট হাজার মেগাওয়াট। তরল জ্বালানি এবং গ্যাস চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পুরোদমে না চালালে সংকট সামাল দেয়া কঠিন হবে। বৈঠক সূত্র বলছে, গত বছর বা তার আগের বছরগুলোতেও গ্রীষ্ম মৌসুমে শহরাঞ্চলে সরবরাহ অনেকটা স্বাভাবিক ছিল। সরকার সারাদেশে স্বাভাবিক সরবরাহের কথা বললেও গ্রামে চাহিদা এবং সরবরাহে মারাত্মক ঘাটতি ছিল। এই অবস্থায় পেট্রোবাংলা পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ না দিতে পারলে গ্রীষ্মে লোডশেডিং এর কবলে পড়তে হবে।
অন্যদিকে কয়েক দফা সময় দিলেও ঢাকার রাস্তার ঝুলন্ত তার পরিস্কার হয়নি। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে রোববার আবারও এ বিষয়ে একটি বৈঠক করেছে ডিস ব্যবসায়ী সমিতি এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডারদের সঙ্গে। বৈঠকে বলা হয়, রাস্তার ঝুলন্ত তার মাটির নিচে দিয়ে সঞ্চালনের জন্য সামিট এবং ফাইবার এ্যাট হোম কাজ পেয়েছিল। কিন্তু তারা ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় এখনও ঝুলন্ত তার রয়ে গেছে। বৈঠকে বিদ্যুৎ ডিস এবং ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা আরো দুই মাস সময় চান। কিন্তু বৈঠকে বলা হয়, এত সময় দেয়া আর সম্ভব নয়। তারা সিঙ্গেল লাইন চাইলেও বৈঠকে তা না দেয়ার পক্ষেই সকল মতামত দেন। প্রতিমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এর ইন্টারনেট ব্যবসার অনুমোদন রয়েছে। প্রয়োজনে আমরাই ইন্টারনেট সরবরাহের ব্যবসা করবো। বৈঠকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ছাড়াও ডিস এবং ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।