বাংলাদেশে ৭.৫ এর বেশি মাত্রার ভূমিকম্প ঘটাতে সক্ষম ভূতাত্ত্বিক গঠন ও উপাত্ত নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশে ৭ দশমিক ৫ এর বেশি মাত্রার ভূমিকম্প ঘটাতে সক্ষম ভূতাত্ত্বিক গঠন ও উপাত্ত নেই। বাংলাদেশে ৯ মাপের ভূমিকম্পের প্রকাশিত মানচিত্র এবং অনুমানটি ভিত্তিহীন। এটি একটি অতিরঞ্জিত অপচেষ্টা। ঢাকা শহরের প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পরিধির মধ্যে ৫ দশমিক ৫ এর বেশিমাত্রার ভূমিকম্প উৎপন্নের কোনো ভূ-আকৃতি বা ভূ-চ্যুতি নেই।
আন্তর্জাতিক ভূতত্ত্ববিদ মীর ফজলুল করিম এক গবেষণা প্রবন্ধে এই তথ্য উপস্থাপন করেছেন।
গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে ৬ মাত্রার বেশি ভূকম্পন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আর উত্তর-পূর্বে কিছু ভু-আকৃতি বা চ্যুতি আছে যা ৭ থেকে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূকম্পন হতে সহায়তা করতে পারে। তবে ভারতের উত্তর ও উত্তর-পূর্বে ৮ মাত্রার ভূকম্পনে সহায়তার মত কয়েকটি আকৃতি ও চ্যুতি আছে।
ঢাকা-মধুপুর সংলগ্ন চ্যুতি একটি এন-এসেলন বা বিভাজিত চ্যুতি হিসাবে জনপ্রিয়। এর প্রকার বিভাজন চ্যুতিটিকে দুর্বল করায় ৪ দশমিক ৫ মাত্রার বেশি আঘাত করতে সক্ষম নয়।
ঢাকাবাসীর জন্য কোনও ভয়ের বা উদ্বেগের কারণ দেখেন না মীর ফজলুল করিম। যদি সকল নকশা মেনে ভবন নির্মাণ এবং গ্রহণযোগ্য ভূপ্রকৌশলিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় তবে সমস্যা নেই।
ঢাকা শহরে এই কম্পনের সম্ভাবনা কতটুকু তা নিয়ে মীর ফজলুল করিম বিষদ গবেষণা করছেন। যা তিনি এবছরই প্রকাশ করবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম মীর ফজলুল করিমের গবেষণার সাথে একমত পোশন করেন। এবিষয়ে তিনি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
২০১৬ সালে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-বিজ্ঞানিরা ঢাকা শহরে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান। এবং বলেন ঢাকা শহর জেলির মত তলিয়ে যাবে। এই ফলাফল বাংলাদেশের জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। বাংলাদেশে অবকাঠামো নির্মাণের খরচ বাড়িয়ে দেয়। যা বাংলাদেশের বিল্ডিং কোডকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
মীর ফজলুল করিম বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক এবং আমেরিকার জন টার্নার কনসাল্টিং ইনক এর পরামর্শক। তিনি বাংলাদেশের সম্ভাব্য বড় বড় ভূমিকম্পের পুনরাবৃত্তির বিষয়ে গবেষণা এবং উপাত্ত সংগ্রহ করেন।