বর্জ্য থেকে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

আগামী ২০২০ সালের মধ্যে বর্জ্য থেকে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় কেরাণীগঞ্জে পরীক্ষামূলক বর্জ্যভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ভবনে সাসটেইনেবল এন্ড রিনিউয়েবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (স্রেডা) আয়োজিত ‘বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়। বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন। স্রেডার চেয়ারম্যান তাপস কুমার রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর পলিন টেমেসিস বক্তব্য রাখেন।
কর্মশালায় উপস্থাপিত প্রবন্ধে জানানো হয়, শুধু ঢাকা শহরে দৈনিক চার থেকে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদন হচ্ছে। চট্টগ্রাম নগরীতে এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার টন, রাজশাহীতে এক থেকে দেড় হাজার টন, খুলনায় ৮০০ থেকে এক হাজার টন, বরিশালে ৭০০ থেকে এক হাজার টন এবং সিলেট ও রংপুর নগরীতে ৫০০ থেকে ৭০০ টন বর্জ্য উৎপাদন হচ্ছে। এসব বর্জ্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। তবে কিছু সমস্যাও আছে। প্রবন্ধে যে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে তাহলো, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যথাযথ আইনের অভাব আছে। স্থানীয়ভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে করা হয় না। বর্জ্য মজুদাগারের সমস্যা, জনসচেতনতার অভাব, সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বের সমস্যা, কারিগরি দক্ষতা এবং পরিবেশ সম্মত উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাব আছে। কর্মশালায় জানানো হয়, প্রাথকিমভাবে বর্জ্য থেকে জ্বালানি তৈরীর জন্য কেরাণীগঞ্জের তিনটি স্থানকে বর্জ্য সংগ্রহের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সুভাড্ডা ইউনিয়নের ঝিলমিল প্রকল্প, মোল্লা পট্টি এবং তেঘুরিয়া বাজার। এই তিন স্থান থেকে প্রায় ২০০ মেট্রিন টন বর্জ্য পাওয়া যাবে। জানানো হয়, বর্তমানে ৬১ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র করার প্রকল্প নেয়া আছে। এগুলো হলো, ঢাকায় ১০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র যা ওয়েষ্ট্ কনসার্ন এর করার কথা। ঢাকার আরও একটি স্থানীয় সরকার বিভাগের করার কথা যার উৎপাদন ক্ষমতা ১০ মেগাওয়াট করে ৫টি মোট ৫০ মেগাওয়াট। এছাড়া গাজিপুরে এক মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার একটি করার কথা ব্র্যাক এর।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বেসরকারি সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় বর্জ্যগুলোকে সম্পদ ও শক্তিতে পরিণত করার উদ্যোগ নিতে হবে। বর্জ্য সুষ্ঠভাবে সংরক্ষণ ও এর বহুল ব্যবহারে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। অনেক পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্জ্য কেরানীগঞ্জের দুটি নদীকে খেয়ে ফেলেছে। নদী দুটি এখন বর্জ্য ফেলার জায়গা হয়ে দাড়িয়েছে। বর্জ্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন যদি সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা না যায় তাহলে এক সময় বর্জ্য ‘এটম বোমা’য় পরিণত হবে।
মনোয়ার ইসলাম বলেন, বর্জ্য এখন বর্জ্য নয়। বর্জ্য এখন তেল হয়েছে। এই বর্জ্য দিয়ে সহজেই বিদ্যুৎ ও গ্যাস উৎপাদন করা যেতে পারে।