পায়রার কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণচুক্তি অক্টোবরে

পায়রায় এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে অক্টোবর মাসে  ঋণ চুক্তি হবে। চীনের এক্সিম ব্যাংক এ কেন্দ্র স্থাপনে  ১৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা বা ১৯০ কোটি ডলার ঋণ দেবে। ঋণের সুদের হার দুই শতাংশের কিছু বেশি।
সম্প্রতি অর্থমন্ত্রণালয়ের অ-রেয়াতি ঋণের স্থায়ী কমিটি (স্ট্যাডিং কমিটি অন নন কনসেশনাল লোন ) এই ঋণচুক্তির শর্ত অনুমোদন দিয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এই কমিটির প্রধান।
এ বিষয়ে নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদ আলম এনার্জি বাংলাকে বলেন,  কেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যে ঋণচুক্তি
হবে বলে আ্শা করছি।
নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি এবং চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি) যৌথভাবে একটি কোম্পানি গঠন করেছে।  বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি। এই কোম্পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করছে। ২০১৯ সালের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করা হবে|
মার্চ মাসে এই কোম্পানির সঙ্গে চীনের নর্থ ইস্প ইলেকট্রিক পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানির মধ্যে ক্রয়, প্রকৌশল ও নির্মান (ইপিসি) চুক্তি হয়।
কোম্পানির ৩০ শতাংশ অর্থ সমানভাবে বিনিয়োগ করবে চীন ও বাংলাদেশ। বাকি ৭০ শতাংশ ঋণ নেয়া হচ্ছে চীনের এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে।
বাংলাদেশে  এই প্রথমবারের মতো কোনো কোম্পানি চুক্তির আগেই অর্থ খরচ করার অনুমোতি দিয়েছে। ফলে ঋণ পাওয়ার আগেই কেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু করে দেয়া হয়েছে। এভাবে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ ছাড় হওয়ার আগেই খরচ করা যাবে।
এজন্য দরপত্রের শর্ত অনুযায়ি ঠিকাদার কোম্পানি নিজেদের অর্থায়নে কাজ শুরু করে দিয়েছে।  চুক্তির পর এই টাকা সমন্বয় করা হবে। এই টাকা দিয়ে ঋণ চুক্তির আগেই কেন্দ্র স্থাপনের ২৫ ভাগ কাজ শেষ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, কেন্দ্রটি স্থাপনে প্রায় এক হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য জমি ভরাটের কাজ চলছে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে পাইলিং এর কাজ শুরু হবে। পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য যে যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হবে তা তৈরির কার্যাদেশও দেয়া হয়েছে।
আমদানি করা কয়লা দিয়ে কেন্দ্রটি চালানো হবে। আমদানির জন্য এরইমধ্যে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া ও চীনের সঙ্গেও এ ধরণের চুক্তি করা হবে। তবে চীনের কাছ থেকে শুধু জরুরী প্রয়োজনে কয়লা আমদানি করা হবে। চীন বর্তমানে কয়লা রপ্তানি করে না। তবে বাংলাদেশকে জরুরী প্রয়োজনে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালাতে কয়লা দিতে মৌখিকভাবে সম্মত হয়েছে বলে জানা গেছে।
আন্ধারমানিক ও রামনাবাদ নদীর মোহনায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করা হবে। নদীতে নাব্য থাকায় গভীর সমুদ্র থেকে ছোট জাহাজে করে কয়লা আনতে সমস্যা হবে না বলে জানানো হয়েছে। এ দুই নদীতে গ্রীষ্ম মৌসুমে ছয় মিটার এবং বর্ষায় ১৩ মিটার পানির গভীরতা থাকে। গভীর সমুদ্রের ৭৫ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে ছোট ছোট জাহাজে করে কয়লা পরিবহন করা হবে।

paira power plant