পরমাণু ব্যবহারে নিরাপত্তা গুরুত্ব পাবে

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, বাংলাদেশে পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহারে সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
বুধবার রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলে ‘শান্তিপূর্ণভাবে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার’ বিষয়ক দুইদিনের সেমিনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত শিরো সাদোসিমা, বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত অ্যালেকজান্ডার এ. নিকোলাভসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ এটমিক এনার্জি কমিশন (বিএইসি) ও জাপানের এটমিক এনার্জি কমিশন (জেএইএ) (ইন্টিগ্রেটেড সার্পোর্ট সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার ননপ্রোলিফিরেশন এন্ড নিউক্লিয়ার সেফটি (আইএসসিএন) যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করেছে। সেমিনারে দুই দেশের মোট ৪১ জন অংশ নিয়েছেন। কিভাবে ঝুঁকিমুক্তভাবে পারমানবিক বিদ্যুত্ ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে এই সেমিনারে মতবিনিময় করা হবে। বাংলাদেশ এক্ষেত্রে জাপানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে তাদের পরামর্শ চাইবে।
অনুষ্ঠানে মাহমুদ আলী বলেন, ২০২১ সালে মধ্য আয়ের এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ধনী দেশ হওয়ার জন্য বাংলাদেশের পারমাণবিক শক্তির বিকল্প নেই। বাংলাদেশে পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহারে সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য বিভিন্ন দক্ষ দেশের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা বিনিময় করছি। বিশেষ করে ২০১১ সালের ১১ মার্চ ফুকোসিমা ডাইসি বিদ্যুত্ কেন্দ্রে দুর্ঘটনার পরে জাপানের অভিজ্ঞতা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে ধনী দেশে হতে শুধু পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল নেই। পারমাণবিক শক্তির পাশাপাশি কয়লাসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারেও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, পারমানবিক শক্তি ব্যবহারে আমাদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে। পারমানবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র বাংলাদেশের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ। তাই ঝুঁকি মুক্ত করেই এই কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। মধ্য মেয়াদে এবং দীর্ঘ মেয়াদে আমাদের জ্বালানি ঘাটতি আছে। চাহিদা ও সরবরাহর মধ্যে পার্থক্য আছে। এই পার্থক্যপূরন করতে হবে। সে লক্ষে আমরা কাজ করছি। রাশিয়ার সাথেও আমরা আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছি। আপাতত চার হাজার মেগাওয়াট উত্পাদন ক্ষমতার পারমানবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে বলে তিনি জানান।
ইয়াফেস ওসমান বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা করছি। যে কারণে সিটিবিটিসহ জাতিসংঘ এবং বিশ্বের বিভিন্ন সামরিক শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ।
জাপানের রাষ্ট্রদুূত বলেন, বাংলাদেশ ১৫০ মিলিয়ন মানুষের দেশ। এটি একটি বড় বাজার। এজন্য বাংলাদেশের জ্বালানি খাতকে এগিয়ে নিতে জাপান সরকার সহযোগিতা করবে। জাপানে সুনামির ফলে যে দুর্ঘটনা ঘটেছিল তা থেকে আমরা ইতিবাচক, নেতিবাচক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এবং এগিয়ে চলেছি। তিনি বলেন, জাপানের মন্ত্রি পরিষদ পারমানবিক শক্তি থেকেই বিদ্যুত্ উত্পাদন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ এই বিদ্যুতের দাম কম। অন্য যে কোন শক্তির বিদ্যুতের দাম অনেক বেশি।
মাহমুদ আলী সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সাথে জাপান সফরে গিয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন ও অর্থনীতি বিষয়ক কয়েকটি প্রকল্পে সই করেছেন। এসব প্রকল্পের বিষয়ে তিনি সেমিনারে উপস্থাপন করেন।