গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব, আইন অনুযায়ি হয়নি

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বিইআরসিতে জমা দিয়েছে পেট্রোবাংলা। তবে আইন অনুযায়ি যথাযথভাবে প্রস্তাব পেশ করা হয়নি। এজন্য এই প্রস্তাব অনুযায়ি গ্যাসের দাম বাড়ানোর কার্যক্রম শুরু করবে না বিইআরসি।
বৃহস্পতিবার পেট্রোবাংলা বিইআরসিতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব জমা দেয়। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) ২০০৩ ও ২০১৩ সালের আইন অনুযায়ি সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানিগুলোর স্ব স্ব অবস্থান থেকে দাম বাড়ানোর নিয়ম রয়েছে। কিন্তু পেট্রোবাংলা প্রচলিত পদ্ধতি অনুযায়ি এককভাবে সকল কোম্পানির পক্ষে একটি মাত্র প্রস্তাব জমা দিয়েছে। এজন্য এই প্রস্তাব অনুযায়ি গ্যাসের দাম বাড়ানোর কার্যক্রম সম্ভব নয় বলে বিইআরসির পক্ষ থেকে পেট্রোবাংলাকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিইআরসির সদস্য সেলিম মাহমুদ জানান, প্রস্তাবটি আমরা গ্রহণ করেছি তবে বিইআরসি থেকে লাইসেন্স নেয়া সকল প্রতিষ্ঠানের হিসাবসহ গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নতুন করে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
পেট্রোবাংলার অধীনে ৫টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি ও একটি সঞ্চালন কোম্পানি আছে। এসব কোম্পানির নিয়ন্ত্রক পেট্রোবাংলা হলেও প্রত্যেক বিতরণ ও সঞ্চালন কোম্পানি বিইআরসি থেকে আলাদা আলাদা লাইসেন্স নিয়েছে। তাই প্রতিটি কোম্পানিকে একক কোম্পানি হিসেবে বিবেচনা করে আলাদা আলাদা প্রস্তাব দেয়ার কথা বলছে বিইআরসি।
এ বিষয়ে পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, পেট্রোবাংলা বিইআরসির কাছে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। বিইআরসি কি করবে তা বিইআরসির সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার কিছু বলার নাই।
গত ফেব্র“য়ারি মাসে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে জ্বালানি মন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমোদন চাওয়া হয়। ওই সময় তারা একটি প্রাথমিক প্রস্তাবও প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেয়। সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমোদন দেন।
পেট্রোবাংলার প্রস্তাব অনুযায়ি, আবাসিক খাতে এক চুলার গ্যাসের দাম ৪০০ থেকে বাড়িয়ে ৮৫০ টাকা এবং দুই চুলা ৪৫০ থেকে বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আবাসিকে মিটার ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে প্রতি হাজার ঘনফুট ১৪৬ টাকা ২৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৩৫ টাকা বা ৬০ দশমিক ৬৮ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতি হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের জন্য ৭৯ টাকা ৮২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮৪ টাকা (৫ দশমিক ২৪ শতাংশ), বাণিজ্যিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ২৬৮ টাকা শূন্য ৯ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩৫০ টাকা (৩০ দশমিক ৫৫ শতাংশ), শিল্প গ্রাহকদের ১৬৫ টাকা ৯১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২২০ টাকা (৩২ দশমিক ৬০ শতাংশ), চা বাগানে ১৬৫ টাকা ৯১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২০০ টাকা (২০ দশমিক ৫৫ শতাংশ), ক্যাপটিভে ১১৮ টাকা ২৬ পয়সা বাড়িয়ে ২৪০ টাকা (১০২ দশমিক ৯৪ শতাংশ) এবং সার কারখানায় ৭২ টাকা ৯২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা (৯ দশমিক ৭১ শতাংশ) করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সিএনজিতে প্রতি হাজার ঘনফুটে ৮৪৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ১৩২ টাকা ৬৭ পয়সা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ গ্যাসের দাম বাড়ানো হয় ২০০৯ সালে।