এলএনজি আমদানিতে আমেরিকার নতুন শর্ত

তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল নির্মাণে মার্কিন কোম্পানি নতুন শর্ত দিয়েছে। এজন্য তারা আগের দেয়া প্রস্তাব থেকে বেশি অর্থ চাইছে। এ নিয়ে পর্যালোচনা করে ছয় দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে কারিগরি কমিটিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেলে জ্বালানি বিভাগে এক বৈঠক থেকে এ নির্দেশ দেয়া হয়। আগামি রবিবার এ বিষয়ে আরো একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপরের দিন সোমবার মার্কিন কােম্পানি ইউএস অ্যাস্ট্রা ওয়েল এ্যান্ড এক্সিলারেট এনার্জিকে বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে। ওই দিন উভয়পক্ষ আলোচনায় একমত হলে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের প্রাথমিক চুক্তি হতে পারে।
জ্বালানি বিভাগের সচিব মোজাম্মেল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পেট্রোবাংলা, অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় এবং রাজস্ববোর্ডের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, দরপত্রে ছিল না এমন কিছু বিষয় মার্কিন কোম্পানি নতুন শর্তে অন্তর্ভুক্ত করেছে। কোম্পানিটি বলছে অবকাঠামো ব্যয় ১৩০ মিলিয়ন ডলারের ১০ ভাগ কম বা বেশি হলে প্রতি ইউনিটের গ্যাসে রূপান্তর ব্যয় ৩৯ সেন্টই থাকবে। তবে অবকাঠামো ব্যয় বাড়লে আনুপাতিহারে ইউনিট প্রতি গ্যাসে রূপান্তরের খরচ বাড়িয়ে দিতে হবে। এছাড়া মার্কিন কোম্পানিটি আলোচনায় দুই মিলিয়ন ডলার পারফরমেন্স গ্যারান্টি (পিজি) দেয়ার বিষয়ে সম্মত হলেও এখন এসে বলছে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশকেও এই প্রকল্পে জমানত জমা রাখতে হবে। এছাড়া সম্ভাব্যতা জরিপের ব্যয় পেট্রোবাংলাকেই বহনের কথা বলছে তারা।
জানতে চাইলে পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর বলেন মার্কিন কোম্পানি বলছে অবকাঠামো নির্মাণ ব্যয়ের আনুপাতিক হারে রিগ্যাসিফিকেশনের (এলএনজিকে পূনরায় গ্যাসে রূপান্তর) খরচ বেশি দিতে হবে। কিন্তু আমরা বলছি খরচ যাই হোক রিগ্যাসিফিকেশনের খরচ ৩৯ সেন্টেই স্থির রাখতে হবে। তারা কিছু বিষয় নতুন করে শর্ত অন্তর্ভুক্ত করেছে। এ জন্য সমঝোতা জরুরী হয়ে পড়েছে।
পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, এলএনজির প্রতি ইউনিট আমদানীতে খরচ পড়বে ১৪ থেকে ১৬ ডলার। আর রিগ্যাসিফিকেশন (তরলকে পূনরায় গ্যাসে রূপান্তর) এর জন্য প্রাথমিক প্রস্তাবে মার্কিন কোম্পানিটি রিগ্যাসিফিকেশনের জন্য ৩৯ সেন্টে হারে দরপত্র জমা দেয়। কিন্তু পরবর্তীকালে বিভিন্ন খরচ সমন্বয় করে তারা এই ব্যয় বাড়ার প্রস্তাব করে। সবশেষ আলোচনায় তারা দাবি করে রিগ্যাসিফিকেশনের খরচ পড়বে ৪৪ সেন্ট। যদিও পেট্রোবাংলা তখনও ৩৯ সেন্টের মধ্যেই এই ব্যয় রাখতে অনুরোধ জানায়। পাকিস্তানে প্রতি ইউনিট ৬৬ সেন্ট রিগ্যাসিফিকেশনের চুক্তিতে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করছে বলে তারা জানিয়েছে।