এক বছরের ব্যবধানে সেচে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে ৫০ মেগাওয়াট

নিজস্ব প্রতিবেদক:
এক বছরের ব্যবধানে কৃষি সেচ কাজে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে ৫০ মেগাওয়াট।
গতবছর শুধু সেচের জন্য গড়ে বিদ্যুৎ লেগেছিল ২ হাজার ৩১৫ মেগাওয়াট। চলতি বছর চাহিদা ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩৭৫ মেগাওয়াট।
আর তিন বছরের ব্যবধানে সর্বোচ্চ চাহিদার সময় বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াটের বেশি।
বিদ্যুৎ বিভাগে অনলাইনে অনুষ্ঠিত সেচ মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এই তথ্য জানানো হয়।
সভায় জানানো হয়, চলতি সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের সম্ভাব্য চাহিদা ১৫ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। গত সেচ মৌসুমে মে মাসে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৯৭ মেগাওয়াট, ২০২০ সালে তা ছিল ১১ হাজার ৯৭৭ মেগাওয়াট।
সেচ মৌসুমে গ্যাসের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ চাহিদা দৈনিক ১৬০ কোটি ঘনফুট, ফার্নেস অয়েলের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ চাহিদা ৭০ হাজার ৫০০ মেট্রিন টন ও ডিজেলের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ চাহিদা ৩০ হাজার ৭০০ মেট্রিন টন।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত
সেচ মৌসুম থাকে। সেচ আর গরম দুটো মিলে এ সময় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সভায় সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, সেচ মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি বিভাগ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করে গ্যাস ও জ্বালানি তেলের যোগান অব্যাহত রাখবে। সুষ্ঠভাবে লোড ব্যবস্থাপনা করা হবে।
তিনি বলেন, প্রায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে। বিদ্যুতের চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেচ মৌসুমে এ চাহিদা আরও বাড়ে। চাহিদা যতই বাড়ুক নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চাহিদা মতো প্রাকৃতিক গ্যাস এবং জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হবে।
চলতি সেচ মৌসুমে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য গ্যাস, ফার্নেস অয়েল ও ডিজেল সরবরাহ বৃদ্ধি করা, যে সকল গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্বিঘ্নে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম, সেসব কেন্দ্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহ করা, চলতি সেচ মৌসুমে জ্বালানি পরিবহনের ক্ষেত্রে যাতে কোন সমস্যা না হয় সে বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ, বিআইডব্লিউটিসি, বিআইডব্লিউটিএ ও বিপিসি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) যোগাযোগ করে জ্বালানি পরিবহণ নিশ্চিত করা, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি), পেট্রোবাংলা ও বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র জ্বালানি তেল, গ্যাস এবং কয়লার সুষ্ঠু সরবরাহ নিশ্চিত করা, সেচে পানির সাশ্রয়ী ব্যবহারের জন্য অলটারনেট ওয়েট এন্ড ড্রাই পদ্ধতি জনপ্রিয় করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো, সেচ পাম্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য গ্রিড উপকেন্দ্র, সঞ্চালন লাইন, বিতরণ লাইন ও উপকেন্দ্র গুলো সংরক্ষণ ও মেরামত কাজ জরুরি ভিত্তিতে শেষ করা, ওভারলোডেড সাবস্টেশন ও সঞ্চালন লাইন আপ গ্রেডেশনের কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে ন্যূনতম দুই মাসের উৎপাদন সক্ষমতা রাখার জন্য জ্বালানি তেলের মজুদ নিশ্চিত করা, সেচ মৌসুমে জরুরি সময়ে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট সংস্থা/কোম্পানির ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা নির্ধারণ ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে লাইভ মনিটরিংএর ব্যবস্থা করা, সেচ পাম্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ তদারকির জন্য মনিটরিং কমিটি গঠন এবং গঠিত মনিটরিং কমিটির কার্যক্রম জোরদার করা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
আলোচনায় বিপিসি, পেট্রোবাংলা, জন নিরাপত্তা বিভাগ, জ্বালানি বিভাগ, নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিসি তাদের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
ভার্চুয়াল এই আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় সভায় অন্যান্যের মাঝে বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)-এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর চেয়ারম্যান মোহাং সেলিম উদ্দিন, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান ও পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন সংযুক্ত থেকে বক্তব্য রাখেন।