সেচের বিদ্যুতের জন্য সার কারখানা বন্ধ রাখা হবে

 

সেচ মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ১ মার্চ থেকে চার সার কারখানা বন্ধ রাখা হবে এবং শহর এলাকায় রাত আটটায় বিপণীবিতান বন্ধের নির্দেশনা কড়াকড়িভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।এজন্য খুব শিগগির দোকান মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠক করবে বিদ্যুত্ বিভাগ।

গতকাল বিদ্যুত্ বিভাগের সভাকক্ষে সেচে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্ সরবরাহ বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী, বিদ্যুত্ সচিব মনোয়ার ইসলাম, পিডিবির চেয়ারম্যান আব্দুহু রুহুল্লাহ, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, ১ মার্চ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সারকারখানাগুলো বন্ধ রাখা হবে।সেচ মৌসুম, রমজান ও গ্রীষ্মের বাড়তি বিদ্যুত্ উত্পাদন করতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।একই সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় সার মজুদ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।পাশাপাশি চালু রাখা হবে সব তেলভিত্তিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র।এজন্য প্রয়োজনীয় তেল মজুদেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে বিপিসিকে।

পিডিবির তথ্যানুযায়ী, গত বছর মোট সেচ সংযোগ ছিলো ২ লাখ ৯৫ হাজার ৪১৫টি।এর সঙ্গে চলতি বছর অনুমোদন দেয়া আরো ১৩ হাজার ২৫৭টি সংযোগ যোগ হয়ে মোট সেচ সংযোগ হয়েছে ৩ লাখ ৮ হাজার ৬৭২টি।এছাড়া অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে আরো ৩১ হাজার ২৫৬টি সেচ সংযোগ।

বিদ্যুত্ বিভাগ সূত্র জানায়, সেচ কাজে বাড়তি এক হাজার ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন ধরা হয়েছে।মোট চাহিদা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট।

তবে জ্বালানি ঘাটতির কারণে চাহিদা পুরণ নিয়ে সংশয়ও রয়েছে।এজন্যই বন্ধ রাখা হবে সারকারখানা।গতবছর ৪৮টি বিদ্যুত্ কেন্দ্রর জন্য গ্যাসের চাহিদা ছিল ১৩৫ কোটি ঘনফুট গ্যাসের।এই চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হয়েছিল ১০১ কোটি ৯০ লাখ ঘনফুট।বিদ্যুতে গ্যাসের ঘাটতি ছিল ৩৩ কোটি ১০ লাখ ঘনফুট।এবছর ৫৯৬ মেগাওয়াট উত্পাদন ক্ষমতার আরো চারটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র উত্পাদনে এসেছে।ফলে বিদ্যুতে মোট গ্যাসের প্রয়োজন হবে ১৪৫ কোটি ঘনফুট গ্যাসের।চারটি সারকারখানা বন্ধ রাখার পরও গতবারের চেয়ে খুব বেশি গ্যাস বিদ্যুতে সরবরাহ করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তেল ভিত্তিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র আছে ৩৫টি।এই কেন্দ্রগুলো সব চালাতে এখন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত লাগবে এক হাজার ৯৪৬ মেট্রিক টন।মার্চ মাস থেকে সব তেলভিত্তিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র চালু রাখা হবে।সড়ক, রেল ও নৌ পথে যেসব বিদ্যুত্ কেন্দ্রে তেল সরবরাহ করা হয় সেসব স্থানে এখন থেকেই যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক করে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।নৌপথে ২১টি, রেলপথে ১২টি এবং সড়ক পথে দুইটি বিদ্যুত্ কেন্দ্রে তেল সরবরাহ করা হয়ে থাকে।