সমুদ্র থেকে পাইপ লাইনে তেল আনা হবে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে

সমুদ্রপথে অয়েল ট্যাংকারে আমদানিকৃত তেল গভীর সমুদ্র থেকে সরাসরি পাইপ লাইনের মাধ্যমে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে নিয়ে আসার জন্য ‘সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং’ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এমপি।

রোববার রোববার চট্টগ্রামের পতেঙ্গা অবস্থিত  ইস্টার্ন রিফাইনারীর কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মধ্যে ২৫ ভাগ দেশে উৎপাদন হয় আর ৭৫ ভাগ বিদেশ থেকে আমদানি হয়। আমদানি নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য ‘ইস্টার্ন রিফাইনারি ইউনিট টু’ নামের নতুন আরেকটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সনাতনি যন্ত্রপাতি দিয়ে ইস্টার্ন রিফাইনারীকে পরিচালনা করা হচ্ছে। এর পরিবর্তে নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজন করে এটিকে আধুনিকায়ন করা হবে।’

‘সমুদ্র পথে বড় জাহাজে করে তেল আনার পর সেটাকে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে নিয়ে আসার জন্য অনেকগুলো লাইটারেজ ব্যবহার করতে হয়। এতে হ্যান্ডলিং সময় ও খরচ অনেক বেশী হয় যায়। পণ্য নষ্ট হয়। এই ক্ষতিটা কমানোর জন্য সরাসরি গভীর সমুদ্র থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে তেল ইস্টার্ন রিফাইনারীতে নিয়ে আসার জন্য ‘সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং’ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে জ্বালানি তেল খালাস হলে প্রতিটি জাহাজে আমরা কয়েক লক্ষ ডলার খরচ কমাতে পারবো।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য ও সাহসী নেতৃত্বের কারণে এসব প্রকল্প হচ্ছে। এসব প্রকল্প বিষয়ে আমরা সংসদীয় কমিটি যাতে অবহিত হতে পারি, জনগণের স্বার্থ সঠিকভাবে সংরক্ষণ হচ্ছে, জ্বালানি নিশ্চয়তার যে স্বপ্ন ও উদ্দেশ্যে সেটা কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে- এসব পরিদর্শনের জন্য আমাদের আসা।’

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের জ্বালানি সেক্টরে আমদানি নির্ভরতা কমানোর জন্য শিগহিরই ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ শুরু হবে। এর মধ্যে প্রকল্পটির কনসালটেন্ট নিয়োগ করা হয়েছে। আশা করছি আগামী সাড়ে তিন বছরের মধ্যে এটি উৎপাদনে যাবে। এ প্রকল্প চালু হলে দেশে অতিরিক্ত তিন মিলিয়ন মেট্রিক টন জ্বালানি তেল উৎপাদন হবে। একই সাথে প্রায় ৫০ বছরের পুরানো দেশের প্রধান তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারীর পুরানো যন্ত্রাংশ বাদ দিয়ে আধুনিক যন্ত্রাংশ সংযোজন করা হবে।’

তেল সেক্টরে দুর্নীতি অনিয়ম সর্ম্পকে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘জ্বালানি তেল সেক্টরে কোনও প্রকার দুর্নীতি অনিয়ম সর্ম্পকে সংসদীয় কমিটি সব সময় স্বোচ্চার রয়েছে। কেউ দুর্নীতির সাথে জড়িত হলে বা কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আর্ন্তজাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় রেখে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে সরকার বিপুল ভতুর্কি দিয়ে বছরের পর বছর জ্বালানি তেল সরবরাহ করেছে। সরকারের বিপুল লোকসান হলেও জনগনের কথা চিন্তা কওে জ্বালানি তেলে ভর্তুকি দেয়া হয়। জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সুফল নাও আসতে পারে। জ্বালানি তেলের টাকা দিয়ে এ সেক্টরের উন্নয়ন করা হচ্ছে।’

পরে সংসদীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ ইর্স্টান রিফাইনারীর বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন। এসময় সাথে ছিলেন স্থানীয় সাংসদ ও কমিটির সদস্য এম এ লতিফ এমপি, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন, ইস্টার্ন রিফাইনারী লিমিটেড, পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানির উর্ধতন কর্মকর্তারা।