সমুদ্রে দ্বিমাত্রিক জরিপ করতে এপ্রিলে চুক্তি

বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের দ্বিমাত্রিক জরিপ (মাল্টিক্লায়েন্ট সিসমিক সার্ভে) করতে বিদেশী কোম্পানির সাথে এমাসেই চুক্তি হতে যাচ্ছে।
রোববার দরপ্রস্তব জমা দেয়ার শেষ দিন। এ পর্যন্ত আটটি কোম্পানি বঙ্গোপসাগরে এই জরিপ করতে দরপ্রস্তাব কিনেছে।
সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগরের যত এলাকা আছে পুরোটা জরিপ করা হবে। পুরোটা জরিপ করতে একটি কোম্পানিকে কাজ দেয়া হবে। চুক্তি হওয়ার পরে জরিপ শেষ করতে ২০ মাস লাগবে। তারপর সমুদ্রে মুল তেল গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র আহবান করা হবে।
জ্বালানি বিভাগের সচিব আবু বকর সিদ্দিক জানান, বাংলাদেশে এধরণের জরিপ প্রথম হতে যাচ্ছে। এই জরিপের তথ্যের ভিত্তিতে দরপত্র আহবান করা হবে। তথ্য থাকবে বলে বেশি বেশি আগ্রহী পাওয়া যাবে। এতে পেট্রোবাংলার কোন খরচ হবে না। তিনি বলেন, দরপ্রস্তাব খোলার পর একমাসের মধ্যে তা মূল্যায়ন করে চুক্তি করা হবে।
সূত্র জানায়, এই জরিপে বাংলাদেশ কোন বিনিয়োগ করবে না। জরিপে যে তথ্য পাওয়া যাবে তার মালিক থাকবে বিদেশী কাজ পাবে সে। বাংলাদেশের এই তথ্য বিক্রির কোন অধিকার থাকবে না। সংশ্লিষ্ট বিদেশী কোম্পানিরই শুধু সেই তথ্য বিক্রি করার ক্ষমতা থাকবে। তারা তথ্য বিক্রি করে বিনিয়োগের অর্থ তুলে নেবে। খরচ উঠে আসার পরে বাংলাদেশ লাভের অংশ পাবে। অতšø তিনটি দেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে এমন কো¤ক্সানিকে কাজ দেয়া হবে। বিদেশী যে কোম্পানির সাথে চুক্তি হবে তারাই এই তথ্যের মূল মালিক থাকবে।
সূত্র জানায়, সমুদ্রের ২০ মিটার থেকে আড়াই হাজার মিটার পর্যন্ত জরিপ করা হবে। ১০ বছরের জন্য বিদেশী কোম্পানির সাথে চুক্তি করা হবে। এরমধ্যে প্রথম দুই বছরে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।
অনেকটা উৎপাদন বন্টন চুক্তির (পিএসসি) আদলে এই চুক্তি হবে। তবে এর সাথে উৎপাদন বন্টন চুক্তি’র কোন সম্পর্ক থাকবে না। পিএসসি করার সময় নতুন করে দরপত্র আহবান করা হবে। নতুন পিএসসি’র খসড়া এই ২০ মাসের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে। ২০১৬ সালে নতুন পিএসসি হতে পারে। সাধারনত যে কোম্পানির সাথে উৎপাদন বন্টন চুক্তি করা হয় তারাই দ্বিমাত্রিক কিংবা ত্রিমাত্রিক জরিপ করে তথ্য নিয়ে থাকে। ভূকাঠামোসহ অন্য কিছু তথ্য পেট্রোবাংলা দিয়ে থাকে।
দ্বিমাত্রিক জরিপের মাধ্যমে সমুদ্রের নিচে গ্যাসের কাঠামো আছে কিনা কিংবা গ্যাস বা তেল থাকার সম্ভাবনা আছে কিনা তা জানা যাবে। এরপর ত্রিমাত্রিক জরিপ এবং কূপ খনন করে নিশ্চিত হওয়া যাবে গ্যাস বা তেলের মজুদ বিষয়ে।
ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সমুদ্র সীমানা নির্ধারণ হওয়ার পর এলাকা ভাগ করেছে পেট্রোবাংলা। সমুদ্রের কোন কোন এলাকায় তেল গ্যাস অনুসন্ধান হবে তা ভাগ করা হয়েছে। গভীর ও অগভীর সমুদ্রে যেসব এলাকায় এখনও কোন অনুসন্ধান হয়নি তার পুরোটা জুড়েই এই জরিপ করা হবে।
চলতি বছর ভারতের সাথে আর দুই বছর আগে মিয়ারমারের সাথে সমুদ্রসীমার বিরোধ নিষ্পত্তির পর প্রায় এক লাখ ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাংলাদেশের সীমানা নির্ধারণ হয়েছে।