শীতে কাপঁছে দেশ

শীতের প্রকপ কমেনি। কুয়াশা আছে সাথে বাতাস। তাই কন কনে ঠাণ্ডা। ঘর থেকে বের হলেই জমে যাওয়ার জোগাড়। সূর্যের দেখা নেই দিনের বেলাও। কুয়াশার চাদরে ঢাকা গোটা দেশ। শৈত্য প্রবাহের কারণে শীত যেন জেকে বসেছে। দেশের উত্তরাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেশি। শনিবারের মতই শীত থাকবে রোববারও।
শনিবার ছিল এবছরের সবচেয়ে কম তাপমাত্রা। শনিবার ঈশরদীতে তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এবছরের সবচেয়ে কম তাপমাত্রা। তাই শীতের তীব্রতাও সেখানে বেশি। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৭ দশমিক ৫।
পৌষের শুরুতে শৈত্যপ্রবাহের সাথে হিমেল বাতাস জনজীবনকে দুর্বিসহ করে তুলেছে। দিনের বেশিরভাগ সময় থাকছে কুয়াশাচ্ছন্ন। সূর্যের দেখা মিললেও তাতে থাকছে না তাপের প্রখরতা। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে শীতজনিত রোগী। শীতে ডায়রিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়া ও সর্দি-কাশিসহ নানা রোগে ভুগছে শিশু ও বৃদ্ধরা। ঠান্ডায় গৃহপালিত পশুরও দেখা দিচ্ছে নানা রোগ।
শীতে শিশুরা ‘কোল্ড ডায়রিয়া’য় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। শিশুদের যেন ঠান্ডা না লাগে সে বিষয়ে অভিভাবকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রোববার আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগসহ যশোর, কুস্টিয়া, সাতক্ষীরা ও টাঙ্গাইল অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত এবং দিনের তাপমাত্রা এক/দুই ডিগ্রী বাড়তে পারে। শীতের এই অবস্থা আরও দুই দিন থাকতে পারে। জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ দেশের বিভিন্ন স্থানের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহে দুর্ভোগে পড়ছেন নিম্নবিত্ত ও ছিন্নমূল মানুষেরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভীড় বাড়ছে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। আবার অনেকেই তাকিয়ে রয়েছেন মানবিক সহায়তার দিকে। এরই মধ্যে দুস্থদের সহায়তায় কম্বলসহ শীতবস্ত্র বিতরণ হচ্ছে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে। হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বাড়ায় দাম বেড়েছে শীতবস্ত্রের। শীতের তীব্রতায় গরম কাপড়ের অভাবে কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটছে। শীতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন একেবারে নিন্ম আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ।
শীতে কাঁপছে উত্তর জনপদ
শীতের তীব্রতা উত্তরাঞ্চলে বেশি। বইছে হিমেল হাওয়াও। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের জনজীবন। গত ২৪ ঘন্টায় শীতজনিত রোগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে অন্ততঃ অর্ধশত রোগী। এরমধ্যে বেশিরভাগই শিশু। শীতজনিত ডাইরিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমা ও শ্বাষকষ্টে ভুগছে শিশুরা।
এদিকে চলতি রবি মৌসুমে এই অঞ্চলের মাঠে রয়েছে আলু, গম, পান, ডাল, ভুট্টা, সবজি ও বোরোর বীজতলা। প্রতিকূল আবহাওয়ায় এই ফসলগুলো নিয়ে তির আশংকায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। শৈত্যপ্রবাহের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উত্তরাঞ্চলের বোরো বীজতলা ও রবি ফসল।