শাহজাহানের গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ

যমুনার তীরে তাজমহলের মতো বিশ্ববিখ্যাত সমাধিসৌধ নির্মাণ করে স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার অনন্য নিদর্শন রেখে গিয়েছিলেন মোগল সম্রাট শাহজাহান। এটা শাহজাহানের প্রেমের বাইরের দিক। কিন্তু ভেতরে ভেতরেও তিনি কতটা স্ত্রীকে ভালোবাসতেন, এর নির্দশনও সম্প্রতি আবিষ্কৃত হয়েছে। শাহজাহান নদীর অন্য তীরে বসে স্ত্রীর সমাধিসৌধ দেখতেন এবং নির্জনে প্রিয়তমাকে অনুভব করতেন। এ জন্য তিনি তাজমহলের অদূরে যুমনা নদীর অন্য তীরে গড়ে তুলেছিলেন একটি বাগানসমৃদ্ধ প্রাসাদ। সম্প্রতি প্রত্নতাত্ত্বিক খননে শাহজাহানের এমন একটি গ্রীষ্মকালীন প্রসাদ আবিষ্কৃত হয়েছে।
ভারতের জাতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘আরকিউলজিক্যাল সারভে অব ইন্ডিয়া’ (এএসআই) সম্প্রতি তাজমহলের বিপরীতে যমুনা নদীর অন্য পারে এই খনন কাজ চালায়। এর আগে সেখানে ‘মাহতাব বাগ’ নামের একটি প্রাচীন বাগান আবিষ্কৃৃত হয়। অনেক দিন থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল, এই বাগানেই বড়সড় কোনো আবিষ্কারের মুখোমুখি হবেন প্রত্নতাত্ত্বিক কর্মীরা। শেষ পর্যন্ত আকর্ষণীয় এক আবিষ্কারই করে বসলেন তাঁরা।
এএসআই কর্মীরা জানান, ভারতে ১২টি দরজার পেভিলিয়ন আকৃতির এক ধরনের ভবনকে ‘বারাদারি’ বলা হয়। তাঁদের খননে এই বারাদারি আকৃতির একটি প্রাসাদের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যে ভবনে অবাধে বাতাস প্রবাহের ব্যবস্থা রাখা ছিল। ধারণা করা হয়, বাগানটি ছিল শাহজাহানের প্রিয় জায়গা। বিশেষ করে তাজমহলের রাতের দৃশ্য দেখার স্থান হিসেবে এটি ব্যবহার করতেন শাহজাহান। মূলত তখন থেকেই এটাকে ‘মেহতাব বাগ’ বলা হতো। উর্দুতে মেহতাব মানে চাঁদের আলো। মূলত চাঁদের আলোতে তাজমহলের যে দৃশ্য ফুটে উঠে, তা ছিল একেবারেই আলাদা। প্রাসাদটির নাম দেওয়া হয়েছে শাহজাহানের গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ।
এ ব্যাপারে এএসআইর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সম্ভবত বন্যা অথবা নিচে শূন্য ফাঁকা জায়গা থাকার কারণে গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদটি মাটির নিচে দেবে গিয়েছিল। এ ছাড়া বিদেশি কোনো কোনো পর্যটকের বর্ণনা মতে, শাহজাহান কালো পাথরের আরেকটি তাজমহল বানিয়েছিলেন বলে যে তথ্য পাওয়া যায়, সম্ভবত এটাই হতে পারে সেই ব্ল্যাক তাজমহল। সূত্র : পিটিআই।