রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের আগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

দুর্ঘটনা এড়াতে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরুর আগে দুর্ঘটনা মোকাবিলার সক্ষমতা ও জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে পরমাণু বিশেষজ্ঞরা।এক্ষেত্রে অন্যদেশের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজস্ব অভিজ্ঞ মানবসম্পদ নিশ্চিত করতে হবে।

গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে‘রূপপুর পরমাণু বিদ্যুত্ প্রকল্প: সম্ভাবনা ও উদ্বেগ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় পরমাণু বিশেষজ্ঞরা এই আহ্বান জানান।বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে।

বাপা’র সহসভাপতি অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদের সভাপতিত্বে সেমিনারে মুল বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশনের প্রাক্তন প্রধান প্রকৌশলী ও বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. আব্দুল মতিন।অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি কমিশনের প্রাক্তন পরিচালক ও পরমাণু বিশেষজ্ঞ ড. জসিমউদ্দিন আহমেদ, পরমাণু বিজ্ঞানী ড. মো: আব্দুল কাইয়ুম, বাপার সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল মতিন, ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট এর সহসভাপতি অধ্যাপক ডা: এম আবু সাঈদ, ডা: পিনাকী ভট্টাচার্য।

পরমাণু বিজ্ঞানী ড. আবদুল মতিন বলেন, পরিবেশবাদীরা এই বিদ্যুত্ প্রকল্পের বিরোধী নয়।কিন্ত্র এ ধরনের বড় ও ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পে বাংলাদেশের সক্ষমতা কতটুকু সেটি দেখতে হবে।তাই এ প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে ওই এলাকার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।আর সরকার যদি তা না পারে, তবে এ প্রকল্প বাদ দিয়ে আরো উন্নত প্রযুক্তির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।তিনি বলেন, রূপপুরে যে পরমাণু রি-অ্যাক্টর নির্মাণ করা হবে, তা পুরোপুরি নির্ভরশীল থাকবে অন্যদেশের ওপর।কিন্তু এটা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমাদের দেশে পর্যাপ্ত দক্ষ লোকবল নেই।এ দিকটি বিবেচনায় রেখে সরকারের এগোনো উচিত।

অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদ বলেন, এ ধরণের একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই যথাযথ গবেষণার মাধ্যমে করতে হবে।নিজস্ব অভিজ্ঞ মানবসম্পদ নিশ্চিত করতে হবে।আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি কমিশনের সুপারিশ ও গাইডলাইনকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

. জসিমউদ্দিন আহমেদ বিশ্বের কয়েকটি পরমাণুকেন্দ্রের বিস্ফোরনের ঘটনা তুলে ধরে বলেন, এ ধরণের দুর্ঘটনা ঘটলে বাংলাদেশের পক্ষে তা সামাল দেয়া কঠিন হবেএলাকার প্রায় ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৩ লাখ লোক সরাসরি এই ক্ষতির শিকার হবেতাই বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা বিবেচনার এনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।যদি গবেষকদের কাছ থেকে নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চিত না হওয়া যায়, তবে এ প্রকল্পে আরো আধুনিক প্রযুক্তির জন্য অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন ড. পিনাকী।