রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগ পাওয়া যাচ্ছে না: এখন রোডশো

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অর্থায়নের জন্য এবার ‘রোডশো’ করা হচ্ছে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যথাযথ বিনিয়োগ না পেয়ে রোডশো করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াতে এই রোডশো করা হবে। বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারিদের সেখানে আমন্ত্রণ জানিয়ে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানানো হবে। ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের আশায় এই আয়োজন করা হচ্ছে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে রোডশো’র দিন এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। ১৮ মে ছিল দরপ্রস্তাব জমা দেয়ার শেষ তারিখ। ভারত, জাপান, চীন, জার্মানী, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ১২টি কোম্পানি এই কেন্দ্র স্থাপনের আগ্রহ দেখিয়েছিল। দরপ্রস্তাব জমার প্রাক আলোচনায় বিভিন্ন শর্ত শিথিলের দাবিও জানিয়েছিল। সুত্র জানায়, নির্দিষ্ট সময়ে আশানুরূপ দরপ্রস্তাব জমা পড়েনি। পরে সাড়া না পেয়ে তা দরপ্রস্তাব জমা দেয়ার তারিখ ১৭ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বিনিয়োগ বোর্ড ও বাংলাদেশ ব্যাংক যৌথভাবে বিআইএফসিএল এর সাথে এই রোডশো’র আয়োজন করবে।
রামপালে বাংলাদেশ ভারত ফ্রেন্ডশিপ কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসিএল) এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করছে। এই কেন্দ্রর ভূমি উন্নয়ন কাজ শেষ হয়েছে। নকশা তৈরীর জন্য জার্মানির ফিসনার কোম্পানির সাথে চুক্তি করা হয়েছে।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রর জন্য ১৪ হাজার কোটি টাকা খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে চার হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ও ভারত নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করবে। বাকী ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার কথা। এই ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ সংগ্রহের জন্যই এই রোডশো করা হচ্ছে।
রাপমাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হলে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে বলে একাধিক সংগঠন এই কেন্দ্র স্থাপন না করার দাবি জানিয়ে আসছে। তবে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আধুনিক যন্ত্র দিয়ে করা হবে বলে এখানে পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না। ইতিমধ্যে পরিবেশের ক্ষতি হবে বিবেচনা করে নরওয়ের একটি ব্যাংক রামপাল কেন্দ্রে বিনিয়োগ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। দেশে এবং বিদেশে এনিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা হচ্ছে। এদিকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারি বিশ্বব্যাংক কিংবা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগের বিষয়ে এখনও নির্দিষ্ট করে কিছুই বলেনি।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং ইন্ডিয়ান থারমাল পাওয়ার করপোরেশন (এনটিপিসি) যৌথভাবে ২০১২ সালে  বিআইএফসি কোম্পানি গঠন করে।  ২০১৮ সালের মধ্যে এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।