মহেশখালিতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে সমঝোতা

মহেশখালিতে ১৩২০  মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে চিনের সাথে সমঝোতা স্বরক সই করল বাংলাদেশ। চায়না হুনদায় হংকং কোম্পানি লি. (সিএইচএইচসি) ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) যৌথভাবে সমান অংশীদারের ভিত্তিতে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবে।
মঙ্গলবার বিদ্যুৎভবনে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমঝোতা স্বারক সই হয়। এসময় পররাস্ট্র মন্ত্রি আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম, বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম, পিডিবি চেয়ারম্যান আবদুহু রুহুলাহ, সিএইচএইচসি এর প্র্রেসিডেন্ট ঝাও লং জুন, বাংলাদেশে নিযুক্ত চিনের এ্যাম্বাসিডর লি জুসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির অর্ধেক মালিকানা থাকবে বাংলাদেশের অর্ধেক চিনের। এখানেও রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো যৌথ কোম্পানি গঠন করা হবে।  যৌথ কোম্পানির বোর্ড সদস্য সংখ্যা হবে নয়জন। এরমধ্যে পাঁচজন হবে চিনা  কোম্পানির।  বোর্ডেও যে কোন সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য দুই তৃতীয়াংশ সদস্যর মতামত লাগবে। যে বিনিয়োহ হবে তার ৭০ শতাংশ ঋণ নেয়া হবে। বাকী ৩০ শতাংশ হবে সম্পদ। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে চীনের সাথে ২৫ বছরের চুক্তি করা হবে। ২০১৯ সালে এখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। এই কেন্দ্রে প্রতিদিন ১১ হাজার টন কয়লা লাগবে। ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, অথবা মোজামবিক থেকে কয়লা আমদানি করা হবে।
পররাস্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সমঝোতার অনুষ্ঠানে বলেন, সব দেশেই বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। অন্যদেশের মত বাংলাদেশেও বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো জরুরী। ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ ঠিক করা হয়েছে। এজন্য সরকার কাজ কওে যাচ্ছে। গ্যাস ছাড়াও বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে কয়লা ভিত্তির বিদ্যুৎ কেন্দ্রর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জনগনের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি পরিবেশের বিষয়টিও গুরুত্বে সাথে দেখবে সরকার। নির্ধারিত সময়েই এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আসবে বলে তিনি আশা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেস্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বলেন, অতীতকে ভুলে গেলে চলবে না। মাঝে মাঝে লোডশেডিং করতে হবে। ৪৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমার কেন্দ্র বন্ধ ছিল বলে কিছুদিন লোডশেডিং ছিল। গরমের কারণে ক্যাবলের ক্ষতি হচ্ছিল। সে জন্যও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে চালানো হচ্ছিল। এখন সর্বোচ্চ চাহিদা সাত হাজার মেগাওয়াটের বেশি। তিনি বলেন, চাহিদা বেশি থাকলেও গরমের কারণে তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ২৪ ঘন্টা চালানো যাচ্ছে না। এজন্য লোড ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তথ্য নিশ্চিত করার জন্য কোলক্লাব করা হবে বলে তিনি জানান।
ঝাও লং জুন বলেন, আমরা চেস্টা করব নিদিস্ট সময়ে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আনতে। এখানে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না। বাংলাদেশের সাথে চিনের সুসম্পর্কের এটি একটি মাইলফলক। চীনের এ্যাম্বাসিডর বলেন, চিন ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব এই সমছোতার মাধ্যমে আরো শক্তিশালি হলো।