ভারতে নিট গ্যাস আমদানি বাড়তে পারে ৪.৯%
ভারতে ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার। চাহিদা মেটাতে দেশটি একদিকে যেমন উত্তোলনে জোর দিচ্ছে, তেমনি বাড়াচ্ছে আমদানিও। ২০২২-৫০ সালের মধ্যে প্রতি বছর দেশটিতে নিট গ্যাস আমদানি ৪ দশমিক ৯ শতাংশ করে বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে মার্কিন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ)।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারতের শিল্প খাতে ক্রমবর্ধমান চাহিদা দেশটিতে গ্যাস আমদানি বাড়ার পেছনে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে সার ও জ্বালানি তেল পরিশোধনাগারগুলোয় চাহিদা বাড়ছে লক্ষ্যণীয় মাত্রায়।
সরকারি তথ্যমতে, ভারত ২০২২ অর্থবছরে ৩ হাজার ১০২ কোটি ৮০ লাখ ঘনফুট তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে। ২০২৩ অর্থবছরে আমদানি বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৬৩০ কোটি ৪০ লাখ ঘনফুটে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে আমদানি হয়েছে ২ হাজার ২৮৫ কোটি ৬০ লাখ ঘনফুট। ইআইএ জানায়, স্থানীয় উত্তোলন ও আমদানি ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে সহায়তা করবে।
সংস্থাটি এক নোটে জানায়, ভারতের নিট গ্যাস আমদানি স্থানীয় উত্তোলনের চেয়ে দ্রুতগতিতে বাড়বে। ২০২২ সালে আমদানি প্রতিদিন ৩৬০ কোটি ঘনফুট করে বেড়েছিল। ২০৫০ সাল নাগাদ প্রতিদিন ১ হাজার ৩৭০ কোটি ঘনফুট করে বাড়তে পারে।
ইআইএ আরো জানায়, ভারতের ভৌগোলিক অবস্থান দেশটিতে গ্যাস উত্তোলন ও আমদানি দুটোকেই প্রভাবিত করে। উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তের বেশির ভাগ অংশই মরুভূমি ও পাহাড়ে ঘেরা হওয়ায় পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস আমদানি করতে পারে না ভারত। এ কারণে স্থানীয় পর্যায়ে এলএনজি উৎপাদন ও আমদানির ওপরই দেশটিকে নির্ভর করতে হয়।
২০২২ সালে ভারতে দৈনিক ৩৩০ কোটি ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন হয়েছিল। ২০৫০ সাল নাগাদ তা তিন গুণ বেড়ে ৯১০ কোটি ঘনফুটে উন্নীত হতে পারে বলে জানিয়েছে ইআইএ। ২০২৫ সাল পর্যন্ত দেশটিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহারও তিন গুণ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো বিদ্যুৎ ও শিল্পোৎপাদনে অনেক বেশি গ্যাসনির্ভর। এসব দেশে গ্যাস উত্তোলনের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে কমছে। ফলে চলতি দশকে এখানে এলএনজির চাহিদায় বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখা দেবে বলে জানিয়েছে শেল এনার্জি।
কোম্পানির প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, এলএনজির ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও নতুন সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকবে। তবে গ্যাস আমদানি অবকাঠামোয় বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে।
এশিয়ার দেশগুলোয় ৫-১০ বছরের মধ্যে এলএনজির চাহিদা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি দশকের শেষ দিকে বেশকিছু নতুন সরবরাহ প্রকল্প চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এগুলোর কার্যক্রম শুরু হলে অঞ্চলটি বাড়তি চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।
– বণিক বার্তা