বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ঢেলে সাজানোর পরামর্শ

জাতীয় বিপর্যয় ঠেকাতে অবিলম্বে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ফ্রিকোয়েন্সি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন এনএলডিসির প্রকৌশলীরা।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ শুক্রবার পাওয়ার গ্রিডের রামপুরার জাতীয় লোড সরবরাহ নিয়ন্ত্রন কেন্দ্রে (এনএলডিসি) বৈঠক করেন। এসময় তারা এ পরামর্শ দেন। বৈঠকে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনীসহ প্রকৌশলীরা উপস্থিত ছিলেন।
এনএলডিসির পক্ষ থেকে প্রতিমন্ত্রীকে জানানো হয়, ২০১৪ সালে জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের পর থেকে এনএলডিসি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য ফ্রিকোয়েন্সি নির্ধারণ করে দিয়েছে ৪৯ দশমিক ৯ থেকে ৫০ দশমিক ১ হার্টজ। এ বিপর্যয়ের আগে দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর তরঙ্গ ছিল ৪৮ দশমিক ৫ থেকে ৫১ দশমিক ৫ হার্টজ। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো তাদের সক্ষমতার পুরোটা বা বেশির ভাগই উৎপাদন করে না। উদাহরণ হিসেবে এনএলডিসি বলছে, যদি কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন করতে পারে তাহলে তাকে ৯০ মেগাওয়াট উৎপাদন বজায় রাখতে হবে। যদি কোনো কারণে জাতীয় সঞ্চালন লাইনের তরঙ্গ কমে যায় তাহলে (বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন কমলে তরঙ্গও কমে যাবে) সঙ্গে সঙ্গে এনএলডিসির নির্দেশ মেনে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন বাড়াতে হবে।
ভারত থেকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা হয়ে যে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করে বাংলাদেশ, সেই সঞ্চালন লাইনে হঠাৎ করেই তরঙ্গ কমে যায় (ভারত থেকে আমদানির ৫০০ মেগাওয়াট কয়েক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে গেলে এ ঘটনা ঘটে)।
বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ছে। একই সাথে আমদানিও বাড়ছে। কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে। দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। কিন্তু বর্তমান সঞ্চালন লাইনের ক্ষমতা দিয়ে এই বিদ্যুৎ পরিবহন সম্ভব নয়। এ জন্য এনএলডিসির পক্ষ থেকে বিকল্প গ্রিড তৈরির পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এখন একটি মাত্র গ্রিড লাইনে সব বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা হয়। এ জন্য বিকল্প গ্রিড লাইন করার সুপারিশ করা হয় বৈঠকে।
এনএলডিসিতে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে জানানো হয়, ঢাকার বিদ্যুৎ বিতরণব্যবস্থার সবটুকু ভূগর্ভে নিয়ে যায়া উচিত। বর্তমানে খুটির সাহায্যে ঢাকায় বিদ্যুৎ বিতরণে নানা সমস্যা তৈরি হয়। সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতেই বিদ্যুৎ বিতরণ বন্ধ হয়ে যায়। ইতিমধ্যে ডেসকো ও ডিপিডিসি কিছু সরবরাহ লাইন ভূগর্ভে নিয়ে গেছে। পর্যায়ক্রমে বিতরণের পুরোটাই ভূগর্ভে নিয়ে যেতে হবে।