বিদ্যুৎ উৎপাদনের সাথে বাড়ছে ভর্তূকি

বিদ্যুৎ উৎপাদনের সাথে বাড়ছে ভর্তূকি। গত পাঁচবছরে বিদ্যুৎখাতে ছয়গুণ ভর্তূকি বেড়েছে। ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এই ভর্তূকি আরও বাড়বে। এসময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে ২৩ হাজার মেগাওয়াট।
রোববার পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৬-২০) দলিলের খাতভিত্তিক আলোচনা করা হয়। এতে বিদ্যুৎ বিভাগ নিয়ে এই পর্যালোচনা উপস্থাপন করা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের অর্থনৈতিক বিভাগ এই পর্যালোচনা করেছে।
৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ি ২০২০ সালের মধ্যে সবার ঘরে  বিদ্যুৎ পৌছে দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন। অন্যদের মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্চিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় নসরুল হামিদ বলেন, কয়লানীতির চেয়ে আগে দরকার কয়লা উত্তোলনের জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। দেশের দামি কয়লা আজকে ইটভাটায় পুড়ছে। আগামীতে বিদ্যুতের জন্য কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। তিনি বলেন, কয়লা উত্তোলনে কিছু আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। দরকার হলে কৃষকের কাছ থেকে জমি লিজ নিতে হবে। মাটির নিচ থেকে কয়লা উত্তোলন এবং মাটির উপরে ফসল উৎপাদন করতে হবে। বড়পুকুরিয়া থেকে ৪০ হাজার টন কয়লা উত্তোলন সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী বছর ১৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের ৯০ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে অপরিকল্পিত গ্রাম ও নগরায়নের জন্য বিদ্যুতে সিস্টেম লস হচ্ছে। এক সময় সিস্টেম লস ৪৪ শতাংশ থাকলেও এখন তা ১৩ শতাংশে নেমেছে। আগামীতে আরও কমবে।
বিদ্যুৎখাতে বিদেশি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পায়রা বন্দরে ১৩ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছে চীন। এছাড়া ভারত থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট এবং নেপাল ও ভুটান থেকেও  ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ পাবে বাংলাদেশ। তবে এ বিষয়ে আরও সময় লাগবে।
সৌর বিদ্যুতের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামীতে সৌর বিদ্যুৎ থেকে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে এজন্য যে প্রচুর জমি প্রয়োজন তা কৃষি জমি নষ্ট না করে সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।
পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বলা হয়, দেশে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বেড়ে চলেছে। ২০১০ সালে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা থেকে ২০১৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ১০০ কোটি টাকায়। চলতি অথবছরে এটা সাত হাজার ১০০ কোটি টাকায় দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ।
খসড়া পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে সফলতা এলেও সরবরাহে সমস্যা রয়েই গেছে। গ্যাস সংকটের কারণে বিদ্যুৎ কয়লাভিত্তিক হওয়া উচিত। সরকারি খাতে ৬০ শতাংশ এবং বেসরকারি খাতে ৪০ শতাংশ বিদ্যুতে অবদান রাখছে। প্রতি বছর গ্যাসের চাহিদা সাত শতাংশ হারে বাড়ছে। বিদ্যুতে এই চাহিদা কমাতে কয়লার উপর জোর দিতে হবে। সরে আসতে হবে পুরনো উৎপাদন পদ্ধতি থেকে।