বাঘ বাঁচাতে সুন্দরবনের ভিতর দিয়ে নৌ চলাচল বন্ধ করতে হবে

বাঘ সম্মেলনে বাংলাদেশ যে অঙ্গীকার করেছিল তা বাস্তবায়ন করা হলে বাঘের সংখ্যা এত কমে যেতো না। বনের ভেতর দিয়ে নৌযান চলাচল করার কথা ছিল না। বাঘ রক্ষা করতে হলে সুন্দরবনের ভেতরে এসব তৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
গতকাল রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিশ্ব বাঘ দিবস-২০১৫ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। ‘বাঘ বাঁচলে, বাঁচবে বন, রক্ষা পাবে সুন্দরবন’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে এবারের বাঘ দিবস পালিত হচ্ছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন। অন্যদের মধ্যে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, অতিরিক্ত সচিব খন্দকার রাকিবুর রহমান, বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন সংরক্ষক তপন কুমার দে, প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুস আলী, বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ক্রিস্টিনি ই কিম্যাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজ।
বনমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের বাঘ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বেড়াতে গেছে। তাই বাঘের সংখ্যা কম হওয়ায় হতাশ হওয়ার কিছু নেই। যখন ওই বাঘগুলো ফিরে আসবে, তখন সংখ্যা বাড়বে। তিনি বলেন, বিশাল জনগোষ্ঠীর এ দেশে বাঘ রক্ষার কাজটি চ্যালেঞ্জ। তবে যে কোন উপায়ে এই প্রাণীটিকে রক্ষা করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের কারো জীবদ্দশায় বাঘ বিলুপ্ত হবার আশংকা নেই। বাঘ রক্ষায় সবাইকে সচেতন হতে হবে।
আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, বাঘের আবাসস্থল রক্ষায় উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো সহায়তা করছে। এই সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি। তপন কুমার দে বলেন, ১৯০০ সালে বিশ্বে বাঘের সংখ্যা ছিল এক লাখ। বর্তমানে তা এত কমে এসেছে। সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায় বনের ভেতর দিয়ে নৌপথ বন্ধ করতে বিকল্প পথ মংলা-ঘসিয়াখালি নৌপথ চালু করার ওপরে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, নৌপথ চালু হওয়ার পর বনের বাঘ শিকার বেড়েছে। ইউনুস আলী বলেন, বাঘ হত্যা ও পাচারের সঙ্গে জড়িত চক্রকে বন বিভাগ চিহ্নিত করেছে। সুন্দরবনের পাশের এলাকার বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি, বন বিভাগের নিচু স্তরের কিছু কর্মকর্তাসহ অনেকেই বাঘ পাচারের সঙ্গে জড়িত। বন বিভাগ জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
মূল প্রবন্ধে মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ২০১১ সালে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত বাঘ সম্মেলনে বাংলাদেশ যে অঙ্গীকার করেছিল তা বাস্তবায়ন করা হলে বাঘের সংখ্যা এতটা কমে আসত না।
এর আগে সকালে বাঘ দিবস উপলক্ষে মানিক মিয়া এভিনিউতে একটি র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়।