৫৩ জেলায় চলছে দাবদাহ, থাকতে পারে অন্তত দশ দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক/বিডিনিউজ :

দেশে চলমান তাপপ্রবাহ মে মাসের ৪/৫ তারিখ পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলতে পারে; তবে এসময়ে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠবে না। এমনই আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

তাপমাত্রা আরেকটু বাড়ার সম্ভাবনা আছে, তবে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এর মধ্যে হালকা সিলেট, নেত্রকোণায় বৃষ্টি  হতে পারে।

পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

এবছর জলীয়বাষ্পের পরিমাণটা বেশি, যে কারণে অস্বস্তি বেশি হচ্ছে। স্বাভাবিক যা থাকার কথা, তার চেয়ে ৪ থেকে ৭ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা উঠছে বিভিন্ন এলাকায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তর, মঙ্গলবার সন্ধ্যার বুলেটিনে দেশের ৫৩ জেলার উপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার তথ্য দিয়েছে।

বলা হয়, রাজশাহী, পাবনা, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর ও পটুয়াখালীর উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

এর বাইরে মৌলভীবাজার, রাঙামাটি, চাঁদপুর, বান্দরবান জেলাসহ রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অবশিষ্টাংশের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝরি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে ঢাকা, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে।

এদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে পাবনার ঈশ্বরদীতে। এসময় ঢাকার তাপমাত্রা তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

একই সময়ে বাগেরহাটের মোংলায় ৪০ ডিগ্রি এবং পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ডের তথ্য দিয়ে আবহাওয়াবিদ আজিজুর রহমান বলেন, উপকূলীয় এলাকায় সাধারণত এতো তাপমাত্রা হয় না। তবে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলেও তাপপ্রবাহ বইছে।

বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রাকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, এসময়ে যে কালবৈশাখী ঝড়ো হাওয়া চলার কথা, সেটা চলে গেছে অনেক উপরে- বিশেষ করে চায়না এলাকায়। এটা যদি বাংলাদেশ বা পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি- এসব বরাবর থাকত তাহলে এদিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা থাকত। স্কেল উপরে থাকার কারণে এ অঞ্চলটা শুষ্ক হয়ে গেছে।

চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় শনিবার; সেদিন যশোরে উঠেছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যে মঙ্গলবার ঢাকায় একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার গুলিস্তানের রাস্তায় হাঁটার সময় প্রচণ্ড গরমে রাস্তায় ঢলে পড়েন এক ব্যক্তি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। ওই ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে মারা যেতে পারেন ধারণা পুলিশের।

এর আগে শনিবার হিট স্ট্রোকে দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। রোববার মেহেরপুরে গৃহবধূ, সিলেটে রিকশাচালক ও নরসিংদীতে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। সোমবার ঢাকার সড়কে অচেতন হয়ে এক রিকশাচালকের মৃত্যু হয়। হিটস্ট্রোকে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকদের ধারণা।