দশ দিনেও রাস্তার ঝুলন্ত তার সরেনি

কথামত দশ দিনেও রাজধানির রাস্তা থেকে ঝুলন্ত তার সরেনি। যে যার ইচ্ছে মত বিদ্যুতের খুঁটিতে তার ঝুলিয়েছে। এটা যেমন ঝুঁকিপূর্ণ তেমনই সৌন্দর্যহানিকর। ঝুলন্ত তার সরানো নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। সংশ্লিষ্ঠরা সময় নিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ সময় দিয়েছেন। কিন্তু তার সরেনি। ফলে ঝুলন্ত তার ঝুলেই থেকেছে। পথচারিসহ গ্রাহকরাও এরফলে ঝুঁকিতে আছে।
বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পনি (ডিপিডিসি) ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) আগামী কিছু দিনের মধ্যে প্রধান সড়কের সকল তার ফেলে দেয়ার অভিযানে নামবে বলে জানা গেছে।
গত সপ্তাহে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেধে দেয়া হয়েছিল। কথা ছিল এই সময়ের মধ্যে নিজস্ব উদ্যোগে ঝুলন্ত সকল তার সরিয়ে নিতে হবে। এই সময় শেষ হলেও রাজধানির কোথাও সে তার সরাতে দেখা যায়নি। নগরীর সকল স্থানে আগের মতই বিদ্যুতের খুটিতে তার ঝুলছে বিশৃংলভাবে। কিছু কিছু স্থানে এমন হয়েছে যে, তারের চাপে খুটিই হেলে যাওয়ার উপক্রম। খুটিতে বিদ্যুতের তার একটি নিয়তান্ত্রিকভাবে থাকলেও অন্য যে তার আছে তা ইচ্ছেমত ঝোলানো হয়। বিশেষ করে ইন্টারনেট ও ডিশ এর তার। ফলে ঝুঁকি বেশিই থাকে।
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ঝুলন্ত তার একদিকে যেমন ঝুঁকিপূর্ণ অন্যদিকে সৌন্দয্যহানি ঘটাচ্ছে। বার বার নোটিশ দেয়া এবং এ সংক্রান্ত ঘোষণার পরও যেসব সংস্থা ঝুলন্ত তার সরাইনি এখন তাদের নিজস্ব উদ্যোগে তা সরাতে হবে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশেই এ কার্যক্রম চালানো হবে বলে তিনি জানান।
ঝুলন্ত তারের মাত্র ২০ শতাংশ মাটির নিচে সরানো হয়েছে। বাকি ৮০ শতাংশ এখনও রাস্তায় ঝুলছে। শুধু তাই নয়, বড় রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটি থেকে ঝুলন্ত তার সরিয়ে নেয়ার বাধ্যবাধকতার কারণে আইএসপি এবং কেবল টিভি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো গলিপথে আরও ঝুঁকিপূর্ণভাবে তার ঝুলিয়েছে। মূল সড়কের ঝুলন্ত তার এখন সরু গলিপথেও ছড়িয়েছে।
বিদ্যুতের খুটি থেকে তার সরাতে আজ মঙ্গলবার বিদ্যুৎ বিভাগে আন্তঃমন্ত্রনালয় বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠকে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী, বিজ্ঞান প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
৩০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ভবনে রাজধানীর ঝুলন্ত তার সরানো নিয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী দশ দিনের মধ্যে ঝুলন্ত তার সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিটিআরসি, বিটিসিএল, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি), ক্যাবল টিভি অপারেটর (কোয়াব) এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার সময় তার সরানোর নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রী।
২০১০ সালে বর্তমান সরকার রাজধানীর সব ঝুলন্ত তার ও বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন মাটির নিচ দিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। গত ৪ বছরে কিছু কিছু এলাকায় তার সরানো হলেও বেশিরভাগই হয়নি। এই সময়ের মধ্যে বিতরণ সংস্থার প থেকে সংশ্লিষ্ঠ সংস্থাগুলোকে বার বার চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
পুরানো ঢাকাসহ রাজধানির বিভিন্ন স্থানে ঝুলন্ত তারের ঝুঁকি ছড়িয়ে আছে। বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, গুলশান, উত্তরা, মিরপুর ও মতিঝিলের ১৫টি গলিপথ ঘুরে আগের অবস্থা দেখা গেছে।
কাওরান বাজারসহ কয়েকটি স্থানে মাটির নিচে দিয়ে তার নেয়া হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ স্থানেই তা এখনও হয়নি।