অবৈধ সংযোগ বৈধ করার আবেদন করেই দায় শেষ!

অবৈধ গ্যাস সংযোগ বৈধ করার দরখাস্ত দিয়েই দায় শেষ করছেন অনেক গ্রাহক। আবেদন করার পরও যেসব নিয়মকানুন পালন করতে হবে সে কাজে তারা সহযোগিতা করছেন না। তিতাসের পক্ষ থেকে সংযোগ বৈধ করার জন্য পরবর্তী কাজ করতে চিঠি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তার জবাব দিচ্ছে না তারা। এ কারণে এক বছর হয়ে গেলেও এ পর্যন্ত মাত্র ১২ হাজার অবৈধ চুলার সংযোগ বৈধ করা হয়েছে। অথচ আবেদন জমা আছে প্রায় দুই লাখ।
গতবছর ৭ই মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবাসিক গ্রাহকদের নতুন করে গ্যাস সংযোগ দেয়ার অনুমোদন দেয়। এরপর পেট্রোবাংলা নতুন করে গ্যাস সংযোগ দেয়ার পাশাপাশি ২০০৯ সালের পর থেকে যারা অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ নিয়েছেন এবং পাশাপাশি যারা মাসিক বিলও দিচ্ছেন তাদের সংযোগ বৈধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গতবছরের ২০ জুন পর্যন্ত অবৈধ গ্যাস সংযোগ বৈধ করার আবেদন নেয়া হয়েছে। ওইদিন পর্যন্ত এক লাখ ৬৪ হাজার ৮০৩টি আবেদন জমা হয়। কিন্তু চলতি বছরের ১০ মে পর্যন্ত মাত্র ১১ হাজার ৮৩৬টি অবৈধ চুলার সংযোগ বৈধ করা হয়েছে।
তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নওশাদ ইসলাম এ বিষয়ে মানবকণ্ঠকে বলেন, বৈধ করার আবেদন করার পর তাদের আর গ্যাসের বিল দিতে হয় না। এজন্য আবেদন জমা দিয়েই বসে থাকছেন কিছু গ্রাহক। যতদিন পারেন ততদিন আর কোনো খোঁজ নেন না। তিনি বলেন, আমরা নতুন করে আবার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এলাকা ভিত্তিতে অবৈধ সংযোগ বৈধ করতে বলছি। চলতি বছরের মধ্যে সব গ্রাহককে বৈধতা দেয়ার পরিকল্পনা আছে। যদি এই সময়ের মধ্যে কেউ জরিমানার টাকা জমা না দেয় তাহলে তাদের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
তিতাস সূত্র জানায়, সংযোগ বন্ধ থাকার সময় ২০১২-১৩ অর্থবছরেই ১০ হাজার ৬৮৮টি সংযোগ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে আবাসিক সংযোগ দেয়া হয়েছে ১০ হাজার ৫৯১টি। আর ২০১১-১২ অর্থবছরে সংযোগ দেয়া হয়েছিল ১৩ হাজার ১৪৫টি। এরমধ্যে আবাসিক গ্রাহকদের ১২ হাজার ৯৭৯টি।
স্ব স্ব বিতরণ কোম্পানিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ জরিমানা দিয়ে বৈধ হওয়ার নিয়ম করে সরকার। অবৈধ গ্রাহকরা বৈধ হতে চাইলে এক বছরের বিল ও তিন মাসের বিলের সমপরিমাণ অর্থ জরিমানা (মোট ৬৭৫০) হিসেবে দেবে। টাকা জমা দিলে গত বছরের ১ জুন থেকে তাদের সংযোগ বৈধ বলে গণ্য করবে সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানি।
তিতাস জানায়, আবেদনকারীরা আবেদন করার পর তিতাস কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে জরিমানার টাকা জমা দেয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে। কিন্তু মাত্র ১৮ শতাংশ গ্রাহক টাকা জমা দিয়ে সংযোগ বৈধ করেছে। বাকীরা টাকা জমা দেয়া অথবা কোনো ধরণের যোগাযোগই করছে। অনেকে গ্যাস বিলও দেয়া বন্ধ রেখেছে। এ অবস্থায় তিতাসের পক্ষ থেকে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। বলা হয়, যেসব অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারী কোম্পানির কাছে বৈধ করার আবেদন করেছেন অথচ কোম্পানি চাহিদাপত্র পাঠানোর পরও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জরিমানা ও বিল বাবদ অর্থ জমা দেননি তাদের খুব শিগগির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ গ্যাস আইন অনুয়ারি ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু তারপরও কোনো সাড়া নেই গ্রাহকদের।